...এত সুন্দর আকাশ, বাতাস,
নক্ষত্র, পৃথিবী, আর মানুষ
যিনি বানিয়ে রেখেছেন,
দেখলেই শুধু তুমি, বাহবা দিলে না,
তোমার কাজের প্রাপ্য মর্যাদা দেয়া না হলে
কি করতে তুমি ভেবে দেখেছ কি???
আকাশপ্রদীপ ..আলোর শিখায় সব আলোকিত করে, মানুষেরে করে যাব ধন্য করে, নব যুগে নব দিগন্তে উদয়ন্ত রবি, আমি হয়ে আসি আজিকার কবি…..
Followers
Saturday, February 22, 2014
মৃত্যু এবং একটি কবিতা
মৃত্যু এবং একটি কবিতা
মৃত্যুকে ভেবে এত হাহাকার লাগে কেন !
মৃত্যুর মত একটা রহস্যময় ব্যাপারে, এত ভয় কেন !
মানুষ রহস্য পছন্দ করে,
তাই আসেপাশে রহস্যময় ভুবন ছড়ানো,
কেউ রহস্য নিয়ে খেলছে,
নতুন পৃথিবী মেলে দিচ্ছে,
জীবনে তাই বেঁচে থাকার অগাদ ইচ্ছে হয় ,
রহস্যময় মৃত্যুকে তবে এত কেন ভয়?
পৃথিবীতে যেসব রহস্য এখন সমাধান হয়নি
মৃত্যু তার একটি,
মৃত্যুর ভুবন থেকে কেউ ফিরে আসেনি,
কেউ ফিরে এসে বলেনি ,
তার স্বাদ এমন !
সেই অদেখা ভুবন যেমন !
মানুষ অদেখাকে পূজো করে,
নতুন শহরে আনন্দ করে,
কিন্তু মৃত্যুকে ভয় করে থাকে ,
মৃত্যুর স্মৃতিকে কিছু, হ্যাঁ কিছু একটা ভুলিয়ে রাখে।
হ্যাঁ! জীবনও এক রহস্যের আধার,
ধীরে ধীরে রহস্যময় অধ্যায় খুলতে থাকে,
পরতে পরতে রহস্যে ঘেরা,
আগামীকে জানে না বলেই
জীবন রহস্যময় এত,
রহস্যময় জীবনকে দু হাত জড়িয়ে মানুষ
গড়েছে তিলোত্তমা শহর,
গড়েছে স্থায়ী (!) ঘর,
পৃথিবীর এই সব মোহ ভুলিয়ে রেখেছে মৃত্যুকে,
মৃত্যুর মত রহস্যময় কিছু তাই দূরে থাকে।
আমার কাছে মনে হয়,
মানুষ মৃত্যুর জন্য কখনো তৈরি নয়,
সে ধরে নিয়েছে
মৃত্যু আসবে বহুদিনে পরে,
তত টুকু সময়
পৃথিবীতে আয়েশে কাটানো যায়,
আয়েশে আমেশে কেটে যায় দিন,
জীবনের কাছে থেকে যায় পাহাড়সম ঋণ,
ভুলে যায় মৃত্যুর দুয়ার,
মৃত্যু এসে যায় কোনদিন তারপর,
কারো কোন নির্দিষ্ট সময় নেই,
কেউ পরে আসলেও সে আগে যায়,
মৃত্যুর মত রহস্যময় ভুবনকে স্বাগত জানাতে,
প্রয়োজন প্রতি মুহূর্তে তৈরি হতে ,
ওপারে দীর্ঘতম যাত্রা যেন সবার আনন্দিত হয়
এই কবিতাখানি সেই আশায়, সেই প্রত্যাশায়...
মৃত্যুকে ভেবে এত হাহাকার লাগে কেন !
মৃত্যুর মত একটা রহস্যময় ব্যাপারে, এত ভয় কেন !
মানুষ রহস্য পছন্দ করে,
তাই আসেপাশে রহস্যময় ভুবন ছড়ানো,
কেউ রহস্য নিয়ে খেলছে,
নতুন পৃথিবী মেলে দিচ্ছে,
জীবনে তাই বেঁচে থাকার অগাদ ইচ্ছে হয় ,
রহস্যময় মৃত্যুকে তবে এত কেন ভয়?
পৃথিবীতে যেসব রহস্য এখন সমাধান হয়নি
মৃত্যু তার একটি,
মৃত্যুর ভুবন থেকে কেউ ফিরে আসেনি,
কেউ ফিরে এসে বলেনি ,
তার স্বাদ এমন !
সেই অদেখা ভুবন যেমন !
মানুষ অদেখাকে পূজো করে,
নতুন শহরে আনন্দ করে,
কিন্তু মৃত্যুকে ভয় করে থাকে ,
মৃত্যুর স্মৃতিকে কিছু, হ্যাঁ কিছু একটা ভুলিয়ে রাখে।
হ্যাঁ! জীবনও এক রহস্যের আধার,
ধীরে ধীরে রহস্যময় অধ্যায় খুলতে থাকে,
পরতে পরতে রহস্যে ঘেরা,
আগামীকে জানে না বলেই
জীবন রহস্যময় এত,
রহস্যময় জীবনকে দু হাত জড়িয়ে মানুষ
গড়েছে তিলোত্তমা শহর,
গড়েছে স্থায়ী (!) ঘর,
পৃথিবীর এই সব মোহ ভুলিয়ে রেখেছে মৃত্যুকে,
মৃত্যুর মত রহস্যময় কিছু তাই দূরে থাকে।
আমার কাছে মনে হয়,
মানুষ মৃত্যুর জন্য কখনো তৈরি নয়,
সে ধরে নিয়েছে
মৃত্যু আসবে বহুদিনে পরে,
তত টুকু সময়
পৃথিবীতে আয়েশে কাটানো যায়,
আয়েশে আমেশে কেটে যায় দিন,
জীবনের কাছে থেকে যায় পাহাড়সম ঋণ,
ভুলে যায় মৃত্যুর দুয়ার,
মৃত্যু এসে যায় কোনদিন তারপর,
কারো কোন নির্দিষ্ট সময় নেই,
কেউ পরে আসলেও সে আগে যায়,
মৃত্যুর মত রহস্যময় ভুবনকে স্বাগত জানাতে,
প্রয়োজন প্রতি মুহূর্তে তৈরি হতে ,
ওপারে দীর্ঘতম যাত্রা যেন সবার আনন্দিত হয়
এই কবিতাখানি সেই আশায়, সেই প্রত্যাশায়...
Friday, February 21, 2014
অন্য পৃথিবী
এখানেও
আছে বিস্ময়,
পৃথিবীর
মত হয়ত নয়,
তবুও অন্য কোনো বিস্ময়ে,
এই পৃথিবীর আকাশ গিয়েছে ছেয়ে,
হয়ত জলের নদী নেই,
কিন্তু
বায়বীয় নদীটাই
এঁকে বেঁকে গেছে রঙ্গন
পৃথিবীতে,
সূর্যটা
হয়ত কিছুটা দুরত্বে
আলো দিয়ে যায়,
লাল, নীল পৃথিবী আলোকিত
হয়
সেখানেও
আছে কিছু বিস্ময়!
সেখানে
হয়ত মানব মানবী নেই,
হয়ত অন্য কোনো প্রাণ তাই
বিচরণ করে,
বেঁচে থাকে
সেই ভুবনের তরে,
ভালোবেসে ভালবাসা
অন্য প্রানের
কাছে আসা,
চেয়ে থেকে নক্ষত্রের ভিরে,
খুঁজে পেতে অন্য
পৃথিবীরে,
হয়ত চাঁদ আছে !
চাঁদ কি আছে ?
জোনাকির
মত নয়তো,
অন্য কোনো পোঁকা হয়ত,
জ্যোত্স্নার
বনে বনে,
আলো জ্বালায়, সবাইকে ডেকে আনে
,
জ্যোত্স্নার
উত্সবে মাতে,
কখনবা
জীবনের ঘাত প্রতিঘাতে,
আকাশের
পানে তাকায়,
আর ভাবে, ‘আর কি
কেউ নাই!
কত দুরে কোন নক্ষত্রকে
ঘিরে,
ভেসে যায় আলোর সাগরে,
ভেবে ভেবে হৃদয় ক্লান্ত
হয়,
সেখানেও
আছে বিস্ময়কর বিস্ময়...
ফেব্রুয়ারী ২১ ২০১৪
লংমন্ট, কলোরাড
Thursday, February 20, 2014
অমর একুশে
অমর একুশে
আমি বাংলায় গান গাই
আমি বাংলার গান গাই
আমি, আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই ।।
আমি বাংলায় দেখি স্বপ্ন
আমি বাংলায় বাঁধি সুর
আমি এই বাংলার মায়াভরা পথে হেঁটেছি এতটা দূর....
মনটা হুহু করে উঠে গানটা শুনলে।
আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারী। মহান এই জন্যে যে, নিজের ভাষার জন্য, মাতৃভাষার জন্য অসীম ভালবাসায়, নিজের প্রাণকে উত্সর্গ করেছিলেন ভাষা শহীদেরা। একবার চুপচাপ ভেবে দেখুন, নিজের ভাষার জন্য ভালবাসা কত প্রকান্ড হলে এটা সম্ভব।
আজ বাংলাদেশে ছুটির দিন। ছুটির দিন মানে ঘুমের দিন। দেশের সবাইকে এত খাটতে হয় যে, ছুটির দিনে হাফ ছেড়ে বাঁচে। কাউকে বলছিনা, ঘুম বাদ দিয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে আসুন। যারা যাবে তারা এমনিতেই যাবে, সাদা পাঞ্জাবি পড়ে, হাতে কিছু ফুল, ঠোঁটে গান,
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।....
আর যারা যাবে না তারা, তারা হয়তো কোনো কারণে যেতে পারবে না। আর ছুটির দিন আল্যিসির সময়, আল্যিস করা স্বাভাবিক। ছুটির দিনেও কিন্তু কিছু কাজ করা যায়, যেমন দেশকে নিয়ে একটু ভাবা যায়, দেশকে আর একটু ভালোবাসা যায়। রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা ভুলে গিয়ে, জীবনে কি পেলাম না পেলাম তা বাদ দিয়ে, পরিবারে সাথে, বন্ধদের সাথে দেশকে নিয়ে কথা বলা যায়, যাদের বাচ্চা কাচ্চা আছে, তাদের সাথে সাথে থেকে একুশে ফেব্রুয়ারী নিয়ে গল্প করা যায়, আজ বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস সেটা অনেক কে জানানো যায় (দুক্ষজনক হলেও সত্যি অনেকে জানেন না ! ) .
আমরা যারা বিদেশে থাকি, অনেকেই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন। দিনটা সপ্তাহের মাঝখানে পড়ায় অনেকে যেতে পারবেন না। কিন্তু কাজের জায়গায় আমরা অনেক কে জানাতে পারি। বিদেশের অনেক অনেক লোকই জানে যা, যে একুশে ফেব্রুয়ারী বিশ্ব মাতৃভাষা(সবারইত মাতৃভাষা আছে) দিবস এবং কেন এই দিবস উদযাপন হয়। আমি আজ পর্যন্ত যাদের যাদের বলেছি, তারা সবাই এই দিনটির কথা শুনে খুব আনন্দিত হয়েছে এবং আমার মনে হয়েছে, বাংলাদেশ আর বাংলা ভাষার পাশাপাশি তার নিজের মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা বেড়েছে।
আমি জানি অনেকেই মহানভাবে, মহান একুশে ফেব্রুয়ারীর দিনটি কাটাবেন। অমর একুশে এভাবেই আমাদের প্রাণ থেকে প্রাণে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌছে যাবে। অমর একুশে শহীদের প্রতি রইলো শ্রদ্ধা আর সবার প্রতি রইলো ভালবাসা।
গানটার প্রতিটা শব্দ আমার ভালো লাগে, তাই তুলে দিলাম
আমি বাংলায় গান গাই
প্রতুল মুখোপাধ্যায়
কন্ঠঃ মাহমুদুজ্জামান বাবু
আমি বাংলায় গান গাই
আমি বাংলার গান গাই
আমি, আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই ।।
আমি বাংলায় দেখি স্বপ্ন
আমি বাংলায় বাঁধি সুর
আমি এই বাংলার মায়াভরা পথে হেঁটেছি এতটা দূর
বাংলা আমার জীবনানন্দ
বাংলা প্রানের সুর
আমি একবার দেখি, বার বার দেখি, দেখি বাংলার মুখ ।।
আমি বাংলায় কথা কই
আমি বাংলার কথা কই
আমি বাংলায় ভাসি, বাংলায় হাসি, বাংলায় জেগে রই ।।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে
করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার
বাংলাই আমার দৃপ্ত স্লোগান
ক্ষিপ্ত তীর ধনুক
আমি একবার দেখি, বার বার দেখি, দেখি বাংলার মুখ ।।
আমি বাংলায় ভালবাসি
আমি বাংলাকে ভালবাসি
আমি তারি হাত ধরে সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে আসি ।।
আমি যা কিছু মহান বরণ করেছি
বিনম্র শ্রদ্ধায়
মেশে তেরো নদী সাত সাগরের জল গঙ্গায় পদ্মায় ।।
বাংলা আমার তৃষ্ণার জল
তৃপ্ত শেষ চুমুক
আমি একবার দেখি, বার বার দেখি, দেখি বাংলার মুখ ।।
আমি বাংলায় গান গাই
আমি বাংলার গান গাই
আমি, আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই ।।
আমি বাংলায় দেখি স্বপ্ন
আমি বাংলায় বাঁধি সুর
আমি এই বাংলার মায়াভরা পথে হেঁটেছি এতটা দূর ।।
বাংলা আমার জীবনানন্দ
বাংলা প্রানের সুর
আমি একবার দেখি, বার বার দেখি, দেখি বাংলার মুখ ।।
লংমন্ট, কলোরাড
২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৪
আমি বাংলায় গান গাই
আমি বাংলার গান গাই
আমি, আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই ।।
আমি বাংলায় দেখি স্বপ্ন
আমি বাংলায় বাঁধি সুর
আমি এই বাংলার মায়াভরা পথে হেঁটেছি এতটা দূর....
মনটা হুহু করে উঠে গানটা শুনলে।
আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারী। মহান এই জন্যে যে, নিজের ভাষার জন্য, মাতৃভাষার জন্য অসীম ভালবাসায়, নিজের প্রাণকে উত্সর্গ করেছিলেন ভাষা শহীদেরা। একবার চুপচাপ ভেবে দেখুন, নিজের ভাষার জন্য ভালবাসা কত প্রকান্ড হলে এটা সম্ভব।
আজ বাংলাদেশে ছুটির দিন। ছুটির দিন মানে ঘুমের দিন। দেশের সবাইকে এত খাটতে হয় যে, ছুটির দিনে হাফ ছেড়ে বাঁচে। কাউকে বলছিনা, ঘুম বাদ দিয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে আসুন। যারা যাবে তারা এমনিতেই যাবে, সাদা পাঞ্জাবি পড়ে, হাতে কিছু ফুল, ঠোঁটে গান,
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী
আমি কি ভুলিতে পারি।....
আর যারা যাবে না তারা, তারা হয়তো কোনো কারণে যেতে পারবে না। আর ছুটির দিন আল্যিসির সময়, আল্যিস করা স্বাভাবিক। ছুটির দিনেও কিন্তু কিছু কাজ করা যায়, যেমন দেশকে নিয়ে একটু ভাবা যায়, দেশকে আর একটু ভালোবাসা যায়। রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা ভুলে গিয়ে, জীবনে কি পেলাম না পেলাম তা বাদ দিয়ে, পরিবারে সাথে, বন্ধদের সাথে দেশকে নিয়ে কথা বলা যায়, যাদের বাচ্চা কাচ্চা আছে, তাদের সাথে সাথে থেকে একুশে ফেব্রুয়ারী নিয়ে গল্প করা যায়, আজ বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস সেটা অনেক কে জানানো যায় (দুক্ষজনক হলেও সত্যি অনেকে জানেন না ! ) .
আমরা যারা বিদেশে থাকি, অনেকেই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন। দিনটা সপ্তাহের মাঝখানে পড়ায় অনেকে যেতে পারবেন না। কিন্তু কাজের জায়গায় আমরা অনেক কে জানাতে পারি। বিদেশের অনেক অনেক লোকই জানে যা, যে একুশে ফেব্রুয়ারী বিশ্ব মাতৃভাষা(সবারইত মাতৃভাষা আছে) দিবস এবং কেন এই দিবস উদযাপন হয়। আমি আজ পর্যন্ত যাদের যাদের বলেছি, তারা সবাই এই দিনটির কথা শুনে খুব আনন্দিত হয়েছে এবং আমার মনে হয়েছে, বাংলাদেশ আর বাংলা ভাষার পাশাপাশি তার নিজের মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা বেড়েছে।
আমি জানি অনেকেই মহানভাবে, মহান একুশে ফেব্রুয়ারীর দিনটি কাটাবেন। অমর একুশে এভাবেই আমাদের প্রাণ থেকে প্রাণে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌছে যাবে। অমর একুশে শহীদের প্রতি রইলো শ্রদ্ধা আর সবার প্রতি রইলো ভালবাসা।
গানটার প্রতিটা শব্দ আমার ভালো লাগে, তাই তুলে দিলাম
আমি বাংলায় গান গাই
প্রতুল মুখোপাধ্যায়
কন্ঠঃ মাহমুদুজ্জামান বাবু
আমি বাংলায় গান গাই
আমি বাংলার গান গাই
আমি, আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই ।।
আমি বাংলায় দেখি স্বপ্ন
আমি বাংলায় বাঁধি সুর
আমি এই বাংলার মায়াভরা পথে হেঁটেছি এতটা দূর
বাংলা আমার জীবনানন্দ
বাংলা প্রানের সুর
আমি একবার দেখি, বার বার দেখি, দেখি বাংলার মুখ ।।
আমি বাংলায় কথা কই
আমি বাংলার কথা কই
আমি বাংলায় ভাসি, বাংলায় হাসি, বাংলায় জেগে রই ।।
আমি বাংলায় মাতি উল্লাসে
করি বাংলায় হাহাকার
আমি সব দেখে শুনে ক্ষেপে গিয়ে করি বাংলায় চিৎকার
বাংলাই আমার দৃপ্ত স্লোগান
ক্ষিপ্ত তীর ধনুক
আমি একবার দেখি, বার বার দেখি, দেখি বাংলার মুখ ।।
আমি বাংলায় ভালবাসি
আমি বাংলাকে ভালবাসি
আমি তারি হাত ধরে সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে আসি ।।
আমি যা কিছু মহান বরণ করেছি
বিনম্র শ্রদ্ধায়
মেশে তেরো নদী সাত সাগরের জল গঙ্গায় পদ্মায় ।।
বাংলা আমার তৃষ্ণার জল
তৃপ্ত শেষ চুমুক
আমি একবার দেখি, বার বার দেখি, দেখি বাংলার মুখ ।।
আমি বাংলায় গান গাই
আমি বাংলার গান গাই
আমি, আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই ।।
আমি বাংলায় দেখি স্বপ্ন
আমি বাংলায় বাঁধি সুর
আমি এই বাংলার মায়াভরা পথে হেঁটেছি এতটা দূর ।।
বাংলা আমার জীবনানন্দ
বাংলা প্রানের সুর
আমি একবার দেখি, বার বার দেখি, দেখি বাংলার মুখ ।।
লংমন্ট, কলোরাড
২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৪
আকাশ
আকাশ
আকাশের
বুকে
মেঘ জমেছে অনেক,
আমি
ঠিক
জানি, কেন আকাশের
মন
খারাপ হয় ,
কেন আকাশেরা আমার
হৃদয়ে
মুখ লুকায় ,
কেন
এত বর্ষা হয় ,
আমি ভিঁজে যাই জলে,
বৃষ্টিস্নাত
বিকেলে,
আমি দু'হাত মেলে
,
আকাশের
দিকে
মুখ তুলে থাকি ,
আকাশকে
কাছে ডাকি ,
আকাশের
বুকে অনেক হাত বুলাই,
আমি ঠিক জানি
Wednesday, February 19, 2014
আকাশসমূহের কবিতা
আকাশসমূহের কবিতা
...আকাশেরা অনেক দুরে, তাই,
আকাশের রং নীল হয়,
ব্যদনার রং যে নীল,
ব্যদনামুখুর আকাশেরা অনন্ত অনাবিল...
********************************
...দুরের আকাশে জলের মেঘ নেই,
পৃথিবীর কাছাকাছি, জলের মেঘ হয়,
রং বেরঙের মেঘেদের দল,
সাদা, কালো, আর লাল
আকাশেরা মানুষদের কাঁদতে শেখায়,
অনাবিল সুখের মাঝে কখনো সখনো কাঁদতে হয়...
*************************************
...সব পৃথিবী ঘিরে মহাকাশ থাকে,
অনুরিত মেঘ আকাশের বুকে,
এইসব মেঘেদের দল গড়ে
অন্য নক্ষত্র অন্য পৃথিবীর তরে,
সেই মহাকাশ ভেঙ্গে ভেঙ্গে
কোনো এক পৃথিবীর কাছে আসে না,
সে এক পৃথিবীর খুব কাছে আসতে পারে না,
সব নক্ষত্রের তরে তাকে বাঁচতে হয় ,
মহাকাশ তাই দুরে থাকে,
কোনো পৃথিবীর খুব কাছাকাছি নয়....
February 19, 2014
...আকাশেরা অনেক দুরে, তাই,
আকাশের রং নীল হয়,
ব্যদনার রং যে নীল,
ব্যদনামুখুর আকাশেরা অনন্ত অনাবিল...
********************************
...দুরের আকাশে জলের মেঘ নেই,
পৃথিবীর কাছাকাছি, জলের মেঘ হয়,
রং বেরঙের মেঘেদের দল,
সাদা, কালো, আর লাল
আকাশেরা মানুষদের কাঁদতে শেখায়,
অনাবিল সুখের মাঝে কখনো সখনো কাঁদতে হয়...
*************************************
...সব পৃথিবী ঘিরে মহাকাশ থাকে,
অনুরিত মেঘ আকাশের বুকে,
এইসব মেঘেদের দল গড়ে
অন্য নক্ষত্র অন্য পৃথিবীর তরে,
সেই মহাকাশ ভেঙ্গে ভেঙ্গে
কোনো এক পৃথিবীর কাছে আসে না,
সে এক পৃথিবীর খুব কাছে আসতে পারে না,
সব নক্ষত্রের তরে তাকে বাঁচতে হয় ,
মহাকাশ তাই দুরে থাকে,
কোনো পৃথিবীর খুব কাছাকাছি নয়....
February 19, 2014
Monday, February 17, 2014
মাতৃভাষা
মাতৃভাষা
ভাষার যে একটা আলাদা রূপ আছে, তা টের পেলাম গতকাল।
প্রত্যেকটি ভাষার একটা নিজস্ব সৌন্দর্য্য আছে । একটি ভাষার সেই সৌন্দর্য্য উপলব্ধি করতে গেলে বা বুঝতে গেলে, সেই ভাষাকে অনেক ভালো ভাবে আয়ত্ত করতে হবে । সবারই কোনো না কোনো ভাষা ভালো করে জানা আছে । অন্তত তার নিজের মাতৃভাষাটা ভালো করে জানার কথা । অনেকে বেশ কয়েকটি ভাষাও আয়ত্ত করতে পারে । তবে মাতৃ ভাষার স্বর, টান বা আবেগ যেভাবে প্রকাশ পায়, সেভাবে অন্য ভাষায় কথা বলা যায় না । তাই মাতৃ ভাষার সৌন্দর্যটা সব চেয়ে বেশি বোঝা যায় ।
এই সৌন্দর্যটা আরো বেশি বোঝা যায়, বাংলা ভাষাভাষী এলাকা থেকে ভিন্ন এলাকায় থাকাকালীন সময় ।
ছোটো বেলা থেকে বাংলা বলে আসছি, আসে পাশের সবাই বাংলা বলছে । মাতৃভাষাকে নিয়ে চিন্তা করার কথা মাথায় আসে নি । ফেব্রয়ারী আসলে, শহীদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে গান গেয়েছি, ফুল দিয়েছি। কিন্তু মাতৃভাষা বলার স্বাদ বা শোনার স্বাদ উপলব্দি করেতে পারিনি, ভাষা এত সুন্দর হতে পারে ভেবে দেখেনি । মাতৃভাষা ছেড়ে ভিন্ন ভাষাভাষী এলাকায় আসতেই উপলব্ধি করলাম, ভাষা কত মধুর হতে পারে, ভাষা কত সুন্দর হতে পারে। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন না :
"মা, তোর মুখের বাণী
আমার কানে লাগে
সুধার মতো"
বলতেও সুধার মতই লাগে, ভাবতেও অনেক ভালো লাগে।
আমি তেমন ভালো ইংলিশ বলতে পারি না । তবে আমি ভালো গ্রামার পারি, ইংরেজি গ্রামার । পরীক্ষায় পাশ করার জন্য গ্রামারের মত কঠিন জিনিস গিলে ফেলেছিলাম । কিন্তু কথা বলা ঠিক মত শেখা হয়নি। ইংরেজি গ্রামার এখনো শক্ত করে মনে গেঁথে আছে । কথা বলার আগে ইংরেজি গ্রামার মিলিয়ে, মনে মনে ট্রান্সলেসন করে তারপর ইংরেজি বলি । প্রায় এমন হয় যে, একটা ইংরেজি বাক্য বলে ফেলেছি, কিন্তু গ্রামারে ভুল হয়েছে, গ্রামার ঠিক আবার সেই বাক্য বলেছি । কিন্তু এখানে কেউ গ্রামার নিয়ে কেউ ভাবে না । কি বলতে চাইছি, সেটা বোঝাতে পারলেই হলো । তাই কেউ যদি, 'আমি যাচ্ছি' বলতে গিয়ে, 'আই অ্যাম গোইং' না বলে 'আই গো' বলে, তাহলেই হয়। 'আই অ্যাম কামিং' না বলে, 'আই আম কামিং' বলেই হয়। আমেরিকায় স্প্যানিশ দের আনাগোনা বেশি, ওরা এভাবেই কথা বলে। ওদের বিপুল জন সংখ্যার জন্য, স্প্যানিশ ভাষা এখানকার দ্বিতীয় ভাষা (সেকেন্ড ল্যাংগুয়েজ ).ওদের তাই ইংলিশ শেখার গরজ নেই । অনেক বাংলাদেশীও অভাবেই কথা বলে। আমি নিজেই এমন একজন । তবে আমি 'আই অ্যাম গোইং' কে 'আই গো' বলি না , এই যা ।
যা বলছিলাম, ইংরেজি কথা বলার আগে গ্রামার ঠিক করে, তারপর ঠিক করি ট্রান্সলেসন, তার পর বলা । অনেক সময় লেগে যায় । ভাব ভঙ্গি তো পরের কথা । কিন্তু আমার কলিগরা সবাই সাদা, ইংলিশ তাদের মাতৃ ভাষা । ফর ফর করে ওরা ইংলিশ বলে যায় । ভাব আবেগও থাকে । কিন্তু তাদের মত করে সতস্ফুর্ত ভাবে ইংরেজিতে বলতে পারি না । কেননা আমার ভাষা তো বাংলা, ওদের ভাষা তো ইংরেজি। ওদের দেশে এসেছি, ওরা তো বাংলা বলবে না, ইংরেজি বলেই আমাকে মনের কথা বলতে হবে। আমি গ্রামার আর ট্রান্সলেসন ঠিক করে ইংরেজি বলে যাচ্ছি, আর ওরা সতস্ফুর্ত ভাবে ইংলিশ বলছে, সুন্দর করে বলছে, আবেগ মিশিয়ে বলে যাচ্ছে, যারা শুনচ্ছে তাদেরও হয়ত ভালো লাগছে।
বাংলাভাষার সৌন্দর্যটা আমি টের পেলাম বিদেশে এসে, বিদেশীদের মাঝখানে বসে । বাংলায় কথা বলার সময় আমাকে ট্রান্সলেসন করে কিছু বলতে হয় না । কত দ্রুত, কত সুন্দর সুন্দর কথা বলতে পারি। এক শ্বাসে অনেকক্ষণ কথা বলতে পারি। মনের আবেগ অনুভুতি মিশিয়ে কথা বলতে পারি । আমার কাছে মনে হল, এইটাই মাতৃভাষার সবচেয়ে সুন্দর দিক । বাংলা বলার সৌন্দর্যটা চোখে পড়ল এখানে এসে। বাংলা বলার জন্য বিদেশ বিভুইয়ে বাংলা বলার লোক খুঁজি। কাছে থেকে অনেক কিছুই সুন্দর লাগে না, দূরে গেলে তা চোখে পড়ে, মনে পড়ে। এতদিন পরে মাতৃভাষার সুন্দর দিকটা চোখে পরার, নিজের ভাষা বলতে পারার মত সুধা অনুভব করার পর, নিজের ভিতর একদিকে যেমন কুণ্ঠা বোধ করি, অনেক দেরি হয়েছে বলে; তেমনি অন্য দিকে আনন্দিত হই, দেরিতে হলেও মাতৃভাষার সুন্দর দিকটা ধরতে পারার কারনে, নিজের ভাষা বলতে পারার কারনে । মাতৃভাষা বাংলার এই সৌন্দর্য, এই অনুভুতির জন্যই হয়ত রফিক, শফিক, বরকতের মত অনেক তাজা তরুণ বাংলার ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে, শহীদ হয়েছে । এখন প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারী বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস পালিত হয় । মাতৃভাষা রক্ষার জন্য, মাতৃভাষার বলার অধিকারের জন্য তাদের এই ত্যাগ, শ্রদ্ধা ভরে স্মরন করি। মাতৃভাষা বলা, শোনা আর অনুভুব করার মত অন্য কোনো ভাষাই হয় না। বাংলা ভাষা আর বাংলাদেশের জন্য রইলো অনেক অনেক ভালবাসা।
ভাষার যে একটা আলাদা রূপ আছে, তা টের পেলাম গতকাল।
প্রত্যেকটি ভাষার একটা নিজস্ব সৌন্দর্য্য আছে । একটি ভাষার সেই সৌন্দর্য্য উপলব্ধি করতে গেলে বা বুঝতে গেলে, সেই ভাষাকে অনেক ভালো ভাবে আয়ত্ত করতে হবে । সবারই কোনো না কোনো ভাষা ভালো করে জানা আছে । অন্তত তার নিজের মাতৃভাষাটা ভালো করে জানার কথা । অনেকে বেশ কয়েকটি ভাষাও আয়ত্ত করতে পারে । তবে মাতৃ ভাষার স্বর, টান বা আবেগ যেভাবে প্রকাশ পায়, সেভাবে অন্য ভাষায় কথা বলা যায় না । তাই মাতৃ ভাষার সৌন্দর্যটা সব চেয়ে বেশি বোঝা যায় ।
এই সৌন্দর্যটা আরো বেশি বোঝা যায়, বাংলা ভাষাভাষী এলাকা থেকে ভিন্ন এলাকায় থাকাকালীন সময় ।
ছোটো বেলা থেকে বাংলা বলে আসছি, আসে পাশের সবাই বাংলা বলছে । মাতৃভাষাকে নিয়ে চিন্তা করার কথা মাথায় আসে নি । ফেব্রয়ারী আসলে, শহীদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে গান গেয়েছি, ফুল দিয়েছি। কিন্তু মাতৃভাষা বলার স্বাদ বা শোনার স্বাদ উপলব্দি করেতে পারিনি, ভাষা এত সুন্দর হতে পারে ভেবে দেখেনি । মাতৃভাষা ছেড়ে ভিন্ন ভাষাভাষী এলাকায় আসতেই উপলব্ধি করলাম, ভাষা কত মধুর হতে পারে, ভাষা কত সুন্দর হতে পারে। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন না :
"মা, তোর মুখের বাণী
আমার কানে লাগে
সুধার মতো"
বলতেও সুধার মতই লাগে, ভাবতেও অনেক ভালো লাগে।
আমি তেমন ভালো ইংলিশ বলতে পারি না । তবে আমি ভালো গ্রামার পারি, ইংরেজি গ্রামার । পরীক্ষায় পাশ করার জন্য গ্রামারের মত কঠিন জিনিস গিলে ফেলেছিলাম । কিন্তু কথা বলা ঠিক মত শেখা হয়নি। ইংরেজি গ্রামার এখনো শক্ত করে মনে গেঁথে আছে । কথা বলার আগে ইংরেজি গ্রামার মিলিয়ে, মনে মনে ট্রান্সলেসন করে তারপর ইংরেজি বলি । প্রায় এমন হয় যে, একটা ইংরেজি বাক্য বলে ফেলেছি, কিন্তু গ্রামারে ভুল হয়েছে, গ্রামার ঠিক আবার সেই বাক্য বলেছি । কিন্তু এখানে কেউ গ্রামার নিয়ে কেউ ভাবে না । কি বলতে চাইছি, সেটা বোঝাতে পারলেই হলো । তাই কেউ যদি, 'আমি যাচ্ছি' বলতে গিয়ে, 'আই অ্যাম গোইং' না বলে 'আই গো' বলে, তাহলেই হয়। 'আই অ্যাম কামিং' না বলে, 'আই আম কামিং' বলেই হয়। আমেরিকায় স্প্যানিশ দের আনাগোনা বেশি, ওরা এভাবেই কথা বলে। ওদের বিপুল জন সংখ্যার জন্য, স্প্যানিশ ভাষা এখানকার দ্বিতীয় ভাষা (সেকেন্ড ল্যাংগুয়েজ ).ওদের তাই ইংলিশ শেখার গরজ নেই । অনেক বাংলাদেশীও অভাবেই কথা বলে। আমি নিজেই এমন একজন । তবে আমি 'আই অ্যাম গোইং' কে 'আই গো' বলি না , এই যা ।
যা বলছিলাম, ইংরেজি কথা বলার আগে গ্রামার ঠিক করে, তারপর ঠিক করি ট্রান্সলেসন, তার পর বলা । অনেক সময় লেগে যায় । ভাব ভঙ্গি তো পরের কথা । কিন্তু আমার কলিগরা সবাই সাদা, ইংলিশ তাদের মাতৃ ভাষা । ফর ফর করে ওরা ইংলিশ বলে যায় । ভাব আবেগও থাকে । কিন্তু তাদের মত করে সতস্ফুর্ত ভাবে ইংরেজিতে বলতে পারি না । কেননা আমার ভাষা তো বাংলা, ওদের ভাষা তো ইংরেজি। ওদের দেশে এসেছি, ওরা তো বাংলা বলবে না, ইংরেজি বলেই আমাকে মনের কথা বলতে হবে। আমি গ্রামার আর ট্রান্সলেসন ঠিক করে ইংরেজি বলে যাচ্ছি, আর ওরা সতস্ফুর্ত ভাবে ইংলিশ বলছে, সুন্দর করে বলছে, আবেগ মিশিয়ে বলে যাচ্ছে, যারা শুনচ্ছে তাদেরও হয়ত ভালো লাগছে।
বাংলাভাষার সৌন্দর্যটা আমি টের পেলাম বিদেশে এসে, বিদেশীদের মাঝখানে বসে । বাংলায় কথা বলার সময় আমাকে ট্রান্সলেসন করে কিছু বলতে হয় না । কত দ্রুত, কত সুন্দর সুন্দর কথা বলতে পারি। এক শ্বাসে অনেকক্ষণ কথা বলতে পারি। মনের আবেগ অনুভুতি মিশিয়ে কথা বলতে পারি । আমার কাছে মনে হল, এইটাই মাতৃভাষার সবচেয়ে সুন্দর দিক । বাংলা বলার সৌন্দর্যটা চোখে পড়ল এখানে এসে। বাংলা বলার জন্য বিদেশ বিভুইয়ে বাংলা বলার লোক খুঁজি। কাছে থেকে অনেক কিছুই সুন্দর লাগে না, দূরে গেলে তা চোখে পড়ে, মনে পড়ে। এতদিন পরে মাতৃভাষার সুন্দর দিকটা চোখে পরার, নিজের ভাষা বলতে পারার মত সুধা অনুভব করার পর, নিজের ভিতর একদিকে যেমন কুণ্ঠা বোধ করি, অনেক দেরি হয়েছে বলে; তেমনি অন্য দিকে আনন্দিত হই, দেরিতে হলেও মাতৃভাষার সুন্দর দিকটা ধরতে পারার কারনে, নিজের ভাষা বলতে পারার কারনে । মাতৃভাষা বাংলার এই সৌন্দর্য, এই অনুভুতির জন্যই হয়ত রফিক, শফিক, বরকতের মত অনেক তাজা তরুণ বাংলার ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে, শহীদ হয়েছে । এখন প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারী বিশ্ব মাতৃভাষা দিবস পালিত হয় । মাতৃভাষা রক্ষার জন্য, মাতৃভাষার বলার অধিকারের জন্য তাদের এই ত্যাগ, শ্রদ্ধা ভরে স্মরন করি। মাতৃভাষা বলা, শোনা আর অনুভুব করার মত অন্য কোনো ভাষাই হয় না। বাংলা ভাষা আর বাংলাদেশের জন্য রইলো অনেক অনেক ভালবাসা।
জীবন- ৩
জীবন- ৩
মৃত্যু এসে নিয়ে যায় জীবনকে তারপর,
স্মৃতিগুলো পড়ে থাকে আর
পরে থাকে ঘর,
মাটির কবর,
স্মৃতিগুলো নিয়ে আসে কাছে,
যেখানে সে শুয়ে আসে,
ফুলের মালায়
ভরে যায় নির্জন শহর,
পরে রয় কত উপহার,
চোখে কোনে অশ্রু আসে তখন,
দেখা যায় মুক্তর মতন,
এইভাবে এই সব স্মৃতির ছবি,
জীবনে আসে, করে যায় দাবি,
পরে থাকে শুধুই স্মৃতি, কিছু নয় আর,
মৃত্যু এসে নিয়ে গেলে জীবনকে তারপর...
মৃত্যু এসে নিয়ে যায় জীবনকে তারপর,
স্মৃতিগুলো পড়ে থাকে আর
পরে থাকে ঘর,
মাটির কবর,
স্মৃতিগুলো নিয়ে আসে কাছে,
যেখানে সে শুয়ে আসে,
ফুলের মালায়
ভরে যায় নির্জন শহর,
পরে রয় কত উপহার,
চোখে কোনে অশ্রু আসে তখন,
দেখা যায় মুক্তর মতন,
এইভাবে এই সব স্মৃতির ছবি,
জীবনে আসে, করে যায় দাবি,
পরে থাকে শুধুই স্মৃতি, কিছু নয় আর,
মৃত্যু এসে নিয়ে গেলে জীবনকে তারপর...
Thursday, February 13, 2014
তুমি
তুমি
...সব কিছুর মাঝে
তোমাকে খোঁজা আমার কাছে অন্তহীন,
এটা হয়তো সবার কাছে অর্থহীন,
হয়তো কারো কাছে দ্বের্থ্যহীন,
কিন্তু সবাইতো তোমার প্রেমে পড়েনি,
সবাইতো তোমাকে আমার মত জানেনি,
জানলে হয়ত,
বুঝতো
আমি আকাশের কথা বলতে গিয়ে কার কথা বলি,
আমায় নদীর কথা বলতে গিয়ে কার কথা বলে চলি,
কবিতার মাঝে কার কথা লিখে যাই প্রতিদিন ,
তবুও সব কিছুর মাঝে
তোমাকে খোঁজা আমার কাছে অন্তহীন...
ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০১৪
...সব কিছুর মাঝে
তোমাকে খোঁজা আমার কাছে অন্তহীন,
এটা হয়তো সবার কাছে অর্থহীন,
হয়তো কারো কাছে দ্বের্থ্যহীন,
কিন্তু সবাইতো তোমার প্রেমে পড়েনি,
সবাইতো তোমাকে আমার মত জানেনি,
জানলে হয়ত,
বুঝতো
আমি আকাশের কথা বলতে গিয়ে কার কথা বলি,
আমায় নদীর কথা বলতে গিয়ে কার কথা বলে চলি,
কবিতার মাঝে কার কথা লিখে যাই প্রতিদিন ,
তবুও সব কিছুর মাঝে
তোমাকে খোঁজা আমার কাছে অন্তহীন...
ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০১৪
আজ বসন্তের সময়
আজ বসন্তের সময়
...আহা! আজ বসন্তের সময়,
পৃথিবীর বুকে থেকে হিলেম আমেজ
মুছে গেছে ধীরে ধীরে,
স্বপ্নগুলো ছেয়ে যাচ্ছে বৃক্ষ জুড়ে,
রঙিন স্বপ্ন
অনেক রঙের স্বপ্ন আর,
পৃথিবীতে বেঁচে থাকার স্বপ্নে বিভোর,
সুরেলা কোকিলেরা গান গায়,
ঝলমলে আকাশে ডানা মেলে দেয়,
বসন্তের হওয়া লাগে পাখনায়,
আহা! আজ বসন্তের সময়,
পৃথিবীর 'পরে বেঁচে থাকতে বড় ইচ্ছে হয়...
১ ফাল্গুন ১৪২০
১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৪
...আহা! আজ বসন্তের সময়,
পৃথিবীর বুকে থেকে হিলেম আমেজ
মুছে গেছে ধীরে ধীরে,
স্বপ্নগুলো ছেয়ে যাচ্ছে বৃক্ষ জুড়ে,
রঙিন স্বপ্ন
অনেক রঙের স্বপ্ন আর,
পৃথিবীতে বেঁচে থাকার স্বপ্নে বিভোর,
সুরেলা কোকিলেরা গান গায়,
ঝলমলে আকাশে ডানা মেলে দেয়,
বসন্তের হওয়া লাগে পাখনায়,
আহা! আজ বসন্তের সময়,
পৃথিবীর 'পরে বেঁচে থাকতে বড় ইচ্ছে হয়...
১ ফাল্গুন ১৪২০
১৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৪
Wednesday, February 12, 2014
আশা বা এক্সপেকটেশন
আশা বা এক্সপেকটেশন
পরিবারের কেউ আমেরিকায় আসলে হুলুস্থুল পরে যায়।
হুলুস্থুল পরার যথেষ্ট কারন আছে। পৃথিবীর অন্য প্রান্তে যাত্রা। বলা যায়, বাংলাদেশের পুরো উল্টা দিকে। বাংলাদেশের সাথে অনেক কিছুই উল্টা পাল্টা। উল্টা পাল্টা পরিবেশে একা একা জীবন যাপন করা একটা হুলুস্থলের বেপার বৈকি। অনেকে বলে নদী থেকে সাগরে আসার উপক্রম, কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, জীবনটাই একটা অনন্ত সাগর, সেটা আমেরিকায় হোক অথবা বাংলাদেশে। সাগর বলে আমেরিকাকে বড় করে, বাংলাদেশ কে কেন ছোটো করা হয়, কে জানে। এটা হতে পারে, যে আসছে আমেরিকায়, সে বড় জায়গায় যাচ্ছে, ভালো জায়গায় আসছে ইত্যাদি বুঝানোর জন্য হয়ত বলে। এখানে আসলেই অনেক ধারণা পাল্টে যায়। তাই বলে আমি বলছি না, আমেরিকা খুব খারাপ জায়গা। আপত্তি শুধু বাংলাদেশকে ছোটো না করে,বাংলাদেশকে প্রাপ্য মর্যাদাটা দেওয়া। হুলুস্থুলে কেন জানি ভুলে যায়, বাংলাদেশটা আমাদের মাতৃভূমি। দেশকে ছোটো করলে কি নিজে ছোটো হয়ে যাই না?
হুলুস্থলে করে এই দেশে এসে দৃশ্য পুরো পুরি পাল্টে যায়। যেই উল্লাসে আমেরিকায় আশা হয়, কাজ করতে করতে সেটা একটা অন্য কিছুতে পরিনত হয়, এই অন্য কিছুটা এক জনের জন্য এক এক রকম। আমি এখানে বিদেশে আশা নিয়ে নেতি বাচক লেখা লেখতে বসি নি। যারা এদেশে এসেছেন, কষ্ট করছেন তাদের অনুভুতিগুলো তাদের থাক। এদেশে আসার পরে নিজের এক্সপেকটেশন যাইহোক, দেশের সবার আশা বা এক্সপেকটেশনটা যে কোথায় যায় আর তার বিপত্তি নিয়ে লেখতে বসেছি।
বিপত্তির গভীরে যাওয়ার আগে, তাদের কথা একটু বলে নেই, যারা শুধুই নিজের আশা বা এক্সপেকটেশনটা ছাড়া পৃথিবীর অন্য কিছু ভাবে না। তাদের সংখ্যা কম। কেননা বিদেশে যারা আসে তারা সবাই চায়, দেশের সবাইকে সাহায্য করতে। কিন্তু যারা সেটা করে না, তাদের সাথে চললে মনে হয় তারা, ধরাকে সরা জ্ঞান করে। পুরো আমেরিকান হয়ে যায়, কোথায় কোথায় বিভি ন্ন স্লাং ব্যবহার করে। যাচ্ছে তাই অবস্থা। তারা হইতো ভালই আসে। ইয়ো ইয়ো জীবন। খারাপ হবার কথা না। ইয়োর ইয়োর বলয়ে অন্য কিছু চান্স পাবার কথাও না। কেউ তাদের থেকে কোন কিছু আশাও করেও না, তারা কারো থেকে কোন কিছু আশা করে না । মামলা খতম।
এবার আসি তাদের আশা বা এক্সপেকটেশন নিয়ে, যারা নিজের আর দেশের আশা ভরসা নিয়ে দোদুল্যমান। দেশের মানুষের আকাশ চুম্বি এক্সপেকটেশন। সেই এক্সপেকটেশনের কাছে নিজের এক্সপেকটেশনটা মিলেয়ে যায় । বিদেশ নিয়ে দেশের মানুষ কি না চিন্তা করে। মনে করে, ওবামা বুশ বসিয়ে বসিয়ে টাকা দেই। দেশের মানুষের এক্সপেকটেশনই হোক অথবা অন্য কোনো কোনো প্রেসারে, কাজের জীবন শুরু হয়, ওভার টাইম, ডাবল ওভার টাইম করে। করে ভালো কথা, যৌবন যার যুদ্ধে যাবার শ্রেষ্ঠ সময় তার। যদিও অনেকের যৌবন থাকে না। তবুও যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আঁশ। সবাই প্রচন্ড পরিশ্রম করে। ডলার কামায়, টাকা জমায়। এ গুলো সবই ঠিকই আছে, কিন্তু ওই যে বললাম দেশের আকাশ চুম্বি এক্সপেকটেশন, ওটাই জীবন দুর্বিসহ করে তুলে।
এই আকাশ চুম্বি এক্সপেকটেশন এর দায়ী কিন্তু আমরাই, যারা বিদেশে থাকি। কেউ এখানে কিভাবে কাজ করি, কিভাবে বেঁচে থাকি, সেটার আসল দৃশ্য দেশের কাউকে বলি না, সবায় মনে করে, দেশে বললে হইতো কষ্ট পাবে, তাদের খারাপ লাগবে। এভাবে ভালো আছি, কোনো সমস্যা নেই বলে অমানবিক কষ্ট চেপে যেতে যেতে, দেশের মানুষ মনে করে, ও তো ভালই আছে, কোনো সমস্যা নেই। কাজ করছে ডলার পাঠাচ্ছে। মন্দ কি !
সবচেয়ে বেশি বিপত্তি হয় বিয়ে করতে গেলে। আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে। কেননা আমেরিকার ছেলের বাজার দর অনেক ভালো। কাজ যাই করুক, ছেলে আমেরিকায় থাকে তা হলেই হলো। পরিবারের নাক আকাশ সমান উঁচু হয়ে যায়। কয়েকটা ঘটনা বলি।
এক ছেলে আমেরিকায় থাকে বেশ কিছু দিন। খাবার বিক্রি করে ফুড ভেন্দিং স্টোরে । সে এখানে আসার পরে থেকেই, এই কাজে আছে, সপ্তায় ছয় দিন কাজ করে, বার ঘন্টা করে। কাজে যাওয়া আর আসা। কাজের যাওয়ার সময় একবার দেশে ফোন দেয়, আসার সময় একবার। কাজে যাওয়ার সময়ের কথোপকথন, "তোমরা আছ কেমন, আমি আছি ভালই। কাজে যাই". কাজ থেকে ফিরার সময়ের কথোপকথন: "তোমরা আছ কেমন, আমি আছি ভালই। কাজ থেকে বাসায় যাই". এর মধ্যেই তার জীবন। কয়েক বছরের পর, দেশে যাবে বিয়ে করতে। মেয়ে এক আমলার মেয়ে। বেশ কিছু কেনা কাটা করে দেশে গেল। ধুম ধাম করে বিয়ে করলো। কেউ প্রশ্ন করলে, ছেলে কি করে: ছেলে আমেরিকায় থাকে। করে অনেক কিছু। অনেক কিছু করা ছেলে আমলার মেয়ে বিয়ে করে, খাবি খাওয়ার মনে অবস্থা হয়। আগে ছিল পরিবারের এক্সপেকটেশন, এখন বাড়ছে আমলার, আমলার স্ত্রীর আর আমলার মেয়ের। ছেলের পরিবারের নাক অন্য সবার কাছে অনেক উঁচু থাকলেও, ছেলের শশুর বাড়ির কাছে ভোঁতা হয়ে থাকে, থাকে তারা কাঁচুমাচু হয়ে। ছেলেকেও কাঁচুমাচু হয়ে থাকতে বলে। হাজার হলেও আমলার মেয়ে। আর আমলার মেয়ে এই সুযোগে, যাসচ্ছেতাই ব্যবহার করে। অনেক কিছু দিয়েও মান রাখা দায়। নাক উঁচু রাখতে গিয়ে, একি বেহাল অবস্থা! শেষে কি অবস্থা হয়েছিল কে জানে, পরিবারের স্ট্যাটাস না মিলিয়ে বিয়ে দিলে এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে।
আর একটা ঘটনা অনেকটা আগেরই মত। তবে এক্ষেত্রে পার্থক্য থাকে বয়সের। পাত্রের বয়স পৈত্রিশ কি চল্লিশ, মেয়ের বয়স ষোল কি সতের। বিশাস করছেন না। হা, এমনি হয়, ছেলের কাজ করতে করতে বয়স চলে গেছে, কি আর করা! তার উপর ছেলে থাকে আমেরিকায়। মেয়ে ভালই থাকবে। কেমন করে যেন, যেসব ছেলেরা দেশে গিয়ে বিয়ে করে, মোটামুটি সবাই, কম বয়সের মেয়ে খুঁজে। দেশের যে অবস্থা, হয়তো বেশি বয়সের মেয়েদের উপর ভরসা পাই না কেউ। বয়সের পার্থক্য কেউ আর ভেবে দেখে না। চপল মতি এক মেয়েকে বিয়ে করে ধুমধাম করে (আমেরিকান সব পাত্রর বিয়ে ধুমধাম করেই হয়, টাকা পয়সা ধার করে হলেও, (সিস্টেম আছে এখানে) বিয়ে ধুমধাম হবেই). তারপর কঁচি মেয়ের মতের সাথে ছেলের খাপ খায় না। খাপ খায়ই বা কি করে, যার বয়স পয়ত্রিশ বা চল্লিশ, তার জীবনের সব রং দেখা শেষ, আর যার এখন ১৬/১৭ বয়স, তার পৃথিবী সবে রঙিন হতে শুরু করছে। তারউপর পাত্রী অবশ্যই কোটি পতির মেয়ে অথবা শিল্প পতির মেয়ে, তাকে কিছু বলা ভীষন বারন। কিন্তু তার সব কথা শুনতে হবে অক্ষরে অক্ষর। বুঝো ঠেলা ! আবার।কখন কোথায় যাচ্ছে, কি করচ্ছে, কাকে ফোন দিচ্ছে, কাদের সাথে চলচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদির খবরদারি মেয়ে ঠিকই করে । সারাদিন ছেলেকে ধমকের উপর রাখে, ছেলে কিছু বলারি সাহস পায় না। এগুলো হয় শুধু দেশে থাকতে, এদেশে আসার পরে তো বাংলাদেশি পাড়ায় তো থাকেই না। কেননা আমেরিকায় এসে 'বাংলাদেশি দেখতে
মন চায় না', 'এরা বড় নোংরা', ' এরা বড় আড্ডা বাজ' এই সব বলে নাক শিটকায়। কে জানে বেচারার কি অবস্থা হয়, তার অবস্থা জানা যায় না, কেননা এখন তারা থাকে বিদেশী পাড়ায় ।
এই আর একটা ব্যাপার যে, এ দেশে এসে, বাংলাদেশীদের দেখলে, নাক শিটকানো অথবা তাচ্ছিল্য করে । কেন রে বাবা, আপনি তো বাংলাদেশেই জন্মিয়েছেন, বাংলাদেশীদের সাথেই বড় হয়ে উঠা, এখানে আসলে ওবামার খালতো ভায়ের নাতি হয়ে যান নাকি। অথবা সপ্তাহে আশি ঘন্টা কাজ করে কিম্ভুতকিমাকার হয়ে গেছে চেহারা কিন্তু অনেক ডলার বাংকে জমেছে। তাই চোখ উঠে গেছে আকাশে। বাংলাদেশী দেখলেই চোখ আকাশে উঠে যায়।
যাইহোক, ইতি টানি এখন। এদেশে অনেক কাজ করার সুযোগ আছে বলেই সবাই কাজ করে অনেক। বাংলাদেশে সেই সুযোগটা নেই, থাকলে হইতো ভিন্ন চিত্র দেখা যেত। আমি তো মনে করি এশিয়ার অন্য দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ অনেক অনেক ভালো করছে। শুধু যদি মন্ত্রীগুলো একটু ভালো হত, বাংলাদেশ আরো অনেক ভালো করত, বাংলাদেশকে আর বাংলাদেশীদের নিয়ে নাক শিটকানো কমত। দেশ ছাড়তে তখন আর আনন্দিত লাগত না। যারা এ দেশে কষ্ট করে জীবন যাপন করছেন, দেশের মানুষকে জানতে দিন, বিদেশ থাকাটা খুব বেশি উপভোগ্য না পরিবার ছেড়ে, এখানে খেঁটে খুটে উপার্জন করতে হয় , সেই উপার্জনের সাথে এক্সপেকটেশনের যেন সামঞ্জস্য থাকে, আপনার জীবনের সাথে অন্য যার জীবন সামাঞ্জস্য হয় তাকেই বিয়ে করা উচিত, আকাশ পাতাল তফাতে না যাওয়াই ভালো। সর্বপরি বাংলাদেশীদের দেখে নাক শিটকানো অবশ্যই বন্ধ করা উচিত। মনে রাখা উচিৎ, দেশকে ছোট করলে, নিজেই অনেক ছোট হবেন।
আমার লেখা কাউকে ব্যক্তিগত ভাবে আঘাত করে থাকলে, ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখবেন। সুন্দর কিছু না হয়, এই ক্ষমা দিয়ে শুরু হোক। পহেলা ফাল্গুনের অনেক শুভেচ্ছা রইল।
লংমণ্ট, কলোরাডো
ফেব্রুয়ারী ১২, ২০১৪
পরিবারের কেউ আমেরিকায় আসলে হুলুস্থুল পরে যায়।
হুলুস্থুল পরার যথেষ্ট কারন আছে। পৃথিবীর অন্য প্রান্তে যাত্রা। বলা যায়, বাংলাদেশের পুরো উল্টা দিকে। বাংলাদেশের সাথে অনেক কিছুই উল্টা পাল্টা। উল্টা পাল্টা পরিবেশে একা একা জীবন যাপন করা একটা হুলুস্থলের বেপার বৈকি। অনেকে বলে নদী থেকে সাগরে আসার উপক্রম, কিন্তু আমার কাছে মনে হয়, জীবনটাই একটা অনন্ত সাগর, সেটা আমেরিকায় হোক অথবা বাংলাদেশে। সাগর বলে আমেরিকাকে বড় করে, বাংলাদেশ কে কেন ছোটো করা হয়, কে জানে। এটা হতে পারে, যে আসছে আমেরিকায়, সে বড় জায়গায় যাচ্ছে, ভালো জায়গায় আসছে ইত্যাদি বুঝানোর জন্য হয়ত বলে। এখানে আসলেই অনেক ধারণা পাল্টে যায়। তাই বলে আমি বলছি না, আমেরিকা খুব খারাপ জায়গা। আপত্তি শুধু বাংলাদেশকে ছোটো না করে,বাংলাদেশকে প্রাপ্য মর্যাদাটা দেওয়া। হুলুস্থুলে কেন জানি ভুলে যায়, বাংলাদেশটা আমাদের মাতৃভূমি। দেশকে ছোটো করলে কি নিজে ছোটো হয়ে যাই না?
হুলুস্থলে করে এই দেশে এসে দৃশ্য পুরো পুরি পাল্টে যায়। যেই উল্লাসে আমেরিকায় আশা হয়, কাজ করতে করতে সেটা একটা অন্য কিছুতে পরিনত হয়, এই অন্য কিছুটা এক জনের জন্য এক এক রকম। আমি এখানে বিদেশে আশা নিয়ে নেতি বাচক লেখা লেখতে বসি নি। যারা এদেশে এসেছেন, কষ্ট করছেন তাদের অনুভুতিগুলো তাদের থাক। এদেশে আসার পরে নিজের এক্সপেকটেশন যাইহোক, দেশের সবার আশা বা এক্সপেকটেশনটা যে কোথায় যায় আর তার বিপত্তি নিয়ে লেখতে বসেছি।
বিপত্তির গভীরে যাওয়ার আগে, তাদের কথা একটু বলে নেই, যারা শুধুই নিজের আশা বা এক্সপেকটেশনটা ছাড়া পৃথিবীর অন্য কিছু ভাবে না। তাদের সংখ্যা কম। কেননা বিদেশে যারা আসে তারা সবাই চায়, দেশের সবাইকে সাহায্য করতে। কিন্তু যারা সেটা করে না, তাদের সাথে চললে মনে হয় তারা, ধরাকে সরা জ্ঞান করে। পুরো আমেরিকান হয়ে যায়, কোথায় কোথায় বিভি ন্ন স্লাং ব্যবহার করে। যাচ্ছে তাই অবস্থা। তারা হইতো ভালই আসে। ইয়ো ইয়ো জীবন। খারাপ হবার কথা না। ইয়োর ইয়োর বলয়ে অন্য কিছু চান্স পাবার কথাও না। কেউ তাদের থেকে কোন কিছু আশাও করেও না, তারা কারো থেকে কোন কিছু আশা করে না । মামলা খতম।
এবার আসি তাদের আশা বা এক্সপেকটেশন নিয়ে, যারা নিজের আর দেশের আশা ভরসা নিয়ে দোদুল্যমান। দেশের মানুষের আকাশ চুম্বি এক্সপেকটেশন। সেই এক্সপেকটেশনের কাছে নিজের এক্সপেকটেশনটা মিলেয়ে যায় । বিদেশ নিয়ে দেশের মানুষ কি না চিন্তা করে। মনে করে, ওবামা বুশ বসিয়ে বসিয়ে টাকা দেই। দেশের মানুষের এক্সপেকটেশনই হোক অথবা অন্য কোনো কোনো প্রেসারে, কাজের জীবন শুরু হয়, ওভার টাইম, ডাবল ওভার টাইম করে। করে ভালো কথা, যৌবন যার যুদ্ধে যাবার শ্রেষ্ঠ সময় তার। যদিও অনেকের যৌবন থাকে না। তবুও যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আঁশ। সবাই প্রচন্ড পরিশ্রম করে। ডলার কামায়, টাকা জমায়। এ গুলো সবই ঠিকই আছে, কিন্তু ওই যে বললাম দেশের আকাশ চুম্বি এক্সপেকটেশন, ওটাই জীবন দুর্বিসহ করে তুলে।
এই আকাশ চুম্বি এক্সপেকটেশন এর দায়ী কিন্তু আমরাই, যারা বিদেশে থাকি। কেউ এখানে কিভাবে কাজ করি, কিভাবে বেঁচে থাকি, সেটার আসল দৃশ্য দেশের কাউকে বলি না, সবায় মনে করে, দেশে বললে হইতো কষ্ট পাবে, তাদের খারাপ লাগবে। এভাবে ভালো আছি, কোনো সমস্যা নেই বলে অমানবিক কষ্ট চেপে যেতে যেতে, দেশের মানুষ মনে করে, ও তো ভালই আছে, কোনো সমস্যা নেই। কাজ করছে ডলার পাঠাচ্ছে। মন্দ কি !
সবচেয়ে বেশি বিপত্তি হয় বিয়ে করতে গেলে। আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে। কেননা আমেরিকার ছেলের বাজার দর অনেক ভালো। কাজ যাই করুক, ছেলে আমেরিকায় থাকে তা হলেই হলো। পরিবারের নাক আকাশ সমান উঁচু হয়ে যায়। কয়েকটা ঘটনা বলি।
এক ছেলে আমেরিকায় থাকে বেশ কিছু দিন। খাবার বিক্রি করে ফুড ভেন্দিং স্টোরে । সে এখানে আসার পরে থেকেই, এই কাজে আছে, সপ্তায় ছয় দিন কাজ করে, বার ঘন্টা করে। কাজে যাওয়া আর আসা। কাজের যাওয়ার সময় একবার দেশে ফোন দেয়, আসার সময় একবার। কাজে যাওয়ার সময়ের কথোপকথন, "তোমরা আছ কেমন, আমি আছি ভালই। কাজে যাই". কাজ থেকে ফিরার সময়ের কথোপকথন: "তোমরা আছ কেমন, আমি আছি ভালই। কাজ থেকে বাসায় যাই". এর মধ্যেই তার জীবন। কয়েক বছরের পর, দেশে যাবে বিয়ে করতে। মেয়ে এক আমলার মেয়ে। বেশ কিছু কেনা কাটা করে দেশে গেল। ধুম ধাম করে বিয়ে করলো। কেউ প্রশ্ন করলে, ছেলে কি করে: ছেলে আমেরিকায় থাকে। করে অনেক কিছু। অনেক কিছু করা ছেলে আমলার মেয়ে বিয়ে করে, খাবি খাওয়ার মনে অবস্থা হয়। আগে ছিল পরিবারের এক্সপেকটেশন, এখন বাড়ছে আমলার, আমলার স্ত্রীর আর আমলার মেয়ের। ছেলের পরিবারের নাক অন্য সবার কাছে অনেক উঁচু থাকলেও, ছেলের শশুর বাড়ির কাছে ভোঁতা হয়ে থাকে, থাকে তারা কাঁচুমাচু হয়ে। ছেলেকেও কাঁচুমাচু হয়ে থাকতে বলে। হাজার হলেও আমলার মেয়ে। আর আমলার মেয়ে এই সুযোগে, যাসচ্ছেতাই ব্যবহার করে। অনেক কিছু দিয়েও মান রাখা দায়। নাক উঁচু রাখতে গিয়ে, একি বেহাল অবস্থা! শেষে কি অবস্থা হয়েছিল কে জানে, পরিবারের স্ট্যাটাস না মিলিয়ে বিয়ে দিলে এর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে।
আর একটা ঘটনা অনেকটা আগেরই মত। তবে এক্ষেত্রে পার্থক্য থাকে বয়সের। পাত্রের বয়স পৈত্রিশ কি চল্লিশ, মেয়ের বয়স ষোল কি সতের। বিশাস করছেন না। হা, এমনি হয়, ছেলের কাজ করতে করতে বয়স চলে গেছে, কি আর করা! তার উপর ছেলে থাকে আমেরিকায়। মেয়ে ভালই থাকবে। কেমন করে যেন, যেসব ছেলেরা দেশে গিয়ে বিয়ে করে, মোটামুটি সবাই, কম বয়সের মেয়ে খুঁজে। দেশের যে অবস্থা, হয়তো বেশি বয়সের মেয়েদের উপর ভরসা পাই না কেউ। বয়সের পার্থক্য কেউ আর ভেবে দেখে না। চপল মতি এক মেয়েকে বিয়ে করে ধুমধাম করে (আমেরিকান সব পাত্রর বিয়ে ধুমধাম করেই হয়, টাকা পয়সা ধার করে হলেও, (সিস্টেম আছে এখানে) বিয়ে ধুমধাম হবেই). তারপর কঁচি মেয়ের মতের সাথে ছেলের খাপ খায় না। খাপ খায়ই বা কি করে, যার বয়স পয়ত্রিশ বা চল্লিশ, তার জীবনের সব রং দেখা শেষ, আর যার এখন ১৬/১৭ বয়স, তার পৃথিবী সবে রঙিন হতে শুরু করছে। তারউপর পাত্রী অবশ্যই কোটি পতির মেয়ে অথবা শিল্প পতির মেয়ে, তাকে কিছু বলা ভীষন বারন। কিন্তু তার সব কথা শুনতে হবে অক্ষরে অক্ষর। বুঝো ঠেলা ! আবার।কখন কোথায় যাচ্ছে, কি করচ্ছে, কাকে ফোন দিচ্ছে, কাদের সাথে চলচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদির খবরদারি মেয়ে ঠিকই করে । সারাদিন ছেলেকে ধমকের উপর রাখে, ছেলে কিছু বলারি সাহস পায় না। এগুলো হয় শুধু দেশে থাকতে, এদেশে আসার পরে তো বাংলাদেশি পাড়ায় তো থাকেই না। কেননা আমেরিকায় এসে 'বাংলাদেশি দেখতে
মন চায় না', 'এরা বড় নোংরা', ' এরা বড় আড্ডা বাজ' এই সব বলে নাক শিটকায়। কে জানে বেচারার কি অবস্থা হয়, তার অবস্থা জানা যায় না, কেননা এখন তারা থাকে বিদেশী পাড়ায় ।
এই আর একটা ব্যাপার যে, এ দেশে এসে, বাংলাদেশীদের দেখলে, নাক শিটকানো অথবা তাচ্ছিল্য করে । কেন রে বাবা, আপনি তো বাংলাদেশেই জন্মিয়েছেন, বাংলাদেশীদের সাথেই বড় হয়ে উঠা, এখানে আসলে ওবামার খালতো ভায়ের নাতি হয়ে যান নাকি। অথবা সপ্তাহে আশি ঘন্টা কাজ করে কিম্ভুতকিমাকার হয়ে গেছে চেহারা কিন্তু অনেক ডলার বাংকে জমেছে। তাই চোখ উঠে গেছে আকাশে। বাংলাদেশী দেখলেই চোখ আকাশে উঠে যায়।
যাইহোক, ইতি টানি এখন। এদেশে অনেক কাজ করার সুযোগ আছে বলেই সবাই কাজ করে অনেক। বাংলাদেশে সেই সুযোগটা নেই, থাকলে হইতো ভিন্ন চিত্র দেখা যেত। আমি তো মনে করি এশিয়ার অন্য দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ অনেক অনেক ভালো করছে। শুধু যদি মন্ত্রীগুলো একটু ভালো হত, বাংলাদেশ আরো অনেক ভালো করত, বাংলাদেশকে আর বাংলাদেশীদের নিয়ে নাক শিটকানো কমত। দেশ ছাড়তে তখন আর আনন্দিত লাগত না। যারা এ দেশে কষ্ট করে জীবন যাপন করছেন, দেশের মানুষকে জানতে দিন, বিদেশ থাকাটা খুব বেশি উপভোগ্য না পরিবার ছেড়ে, এখানে খেঁটে খুটে উপার্জন করতে হয় , সেই উপার্জনের সাথে এক্সপেকটেশনের যেন সামঞ্জস্য থাকে, আপনার জীবনের সাথে অন্য যার জীবন সামাঞ্জস্য হয় তাকেই বিয়ে করা উচিত, আকাশ পাতাল তফাতে না যাওয়াই ভালো। সর্বপরি বাংলাদেশীদের দেখে নাক শিটকানো অবশ্যই বন্ধ করা উচিত। মনে রাখা উচিৎ, দেশকে ছোট করলে, নিজেই অনেক ছোট হবেন।
আমার লেখা কাউকে ব্যক্তিগত ভাবে আঘাত করে থাকলে, ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখবেন। সুন্দর কিছু না হয়, এই ক্ষমা দিয়ে শুরু হোক। পহেলা ফাল্গুনের অনেক শুভেচ্ছা রইল।
লংমণ্ট, কলোরাডো
ফেব্রুয়ারী ১২, ২০১৪
Tuesday, February 11, 2014
জীবন-২
...আজ পৃথিবীর মানব মানবীরা,
বেঁচে কি আছে তারা?
মৃত্যু চায় যারা,
কেন মৃত্যু চায়?
কেন জীবনকে করে ভয়?
এত কেন ঘৃণায় অবগাহ,
এত কেন হয় হৃদয় দাহ,
এতটুকু কি প্রেম নাই,
যতটুকু ভালবাসায়,
এই পৃথিবীর 'পরে
মানব মানবীরা তুলেছিল গড়ে
প্রেমের বেদী,
নতুন পৃথিবী,
সেই প্রেম নাই,
তাই শুধু মৃত্যু চায়,
জীবনকে করে ভয়,
জীবনের কাছে আসে নাই,
যদি ভালবাসত
তারপর জীবনেরে,
বাঁচতে চাইত
সুন্দর পৃথিবীর 'পরে,
সযতনে রাখত প্রেমের বেদী,
রঙ্গিন করত ধুসর পৃথিবী,
মৃত্যু চাইত না আর,
জীবনের তরে ফিরে আসত বার বার...
...আজ পৃথিবীর মানব মানবীরা,
বেঁচে কি আছে তারা?
মৃত্যু চায় যারা,
কেন মৃত্যু চায়?
কেন জীবনকে করে ভয়?
এত কেন ঘৃণায় অবগাহ,
এত কেন হয় হৃদয় দাহ,
এতটুকু কি প্রেম নাই,
যতটুকু ভালবাসায়,
এই পৃথিবীর 'পরে
মানব মানবীরা তুলেছিল গড়ে
প্রেমের বেদী,
নতুন পৃথিবী,
সেই প্রেম নাই,
তাই শুধু মৃত্যু চায়,
জীবনকে করে ভয়,
জীবনের কাছে আসে নাই,
যদি ভালবাসত
তারপর জীবনেরে,
বাঁচতে চাইত
সুন্দর পৃথিবীর 'পরে,
সযতনে রাখত প্রেমের বেদী,
রঙ্গিন করত ধুসর পৃথিবী,
মৃত্যু চাইত না আর,
জীবনের তরে ফিরে আসত বার বার...
কবি
... আমি আগা গোঁড়া
পুরদস্তর এক কবি,
চেনা অচেনার,
অবাক করা যত ছবি,
যত রূপ
পৃথিবীর অপরূপ,
আমার ভাবনায়
স্থান পেতে চায়,
আমাকে বলা হয়,
সব কিছু নিয়ে যেন
কবিতা লেখা হয়,
অগনিত নক্ষত্রের
প্রকৃত অবয়ব,
অজানার পারে
আকাশের দল সব,
চেনা দৃষ্টির বাইরের ছবি যত,
আমার দৃষ্টির আলোকে উন্মোচিত,
ভুবনের যত সুর,
ভাল লাগা সুমধুর,
আমার হৃদয়ে
পুরে দিয়ে,
বলা হল
গাও! গান গাও,
সুরে সুরে ভুবনটা ভরে দাও,
সুমধুর সব ভাবনায়,
সময়ের আসা যাওয়ায়,
কবিতায় আঁকি কত ছবি,
আমি আগা গোঁড়া
পুরদস্তর এক কবি,
আমি আগা গোঁড়া
পুরদস্তর এক কবি।
... আমি আগা গোঁড়া
পুরদস্তর এক কবি,
চেনা অচেনার,
অবাক করা যত ছবি,
যত রূপ
পৃথিবীর অপরূপ,
আমার ভাবনায়
স্থান পেতে চায়,
আমাকে বলা হয়,
সব কিছু নিয়ে যেন
কবিতা লেখা হয়,
অগনিত নক্ষত্রের
প্রকৃত অবয়ব,
অজানার পারে
আকাশের দল সব,
চেনা দৃষ্টির বাইরের ছবি যত,
আমার দৃষ্টির আলোকে উন্মোচিত,
ভুবনের যত সুর,
ভাল লাগা সুমধুর,
আমার হৃদয়ে
পুরে দিয়ে,
বলা হল
গাও! গান গাও,
সুরে সুরে ভুবনটা ভরে দাও,
সুমধুর সব ভাবনায়,
সময়ের আসা যাওয়ায়,
কবিতায় আঁকি কত ছবি,
আমি আগা গোঁড়া
পুরদস্তর এক কবি,
আমি আগা গোঁড়া
পুরদস্তর এক কবি।
লেখক
সবাই লেখালেখি করতে পারে না, যারা লেখালেখি করেন, তারা সৌভাগ্যবান/সৌভাগ্যবতী। আমি বাড়িয়ে বলছি না, যারা নিয়মিতি লেখেন তারা আসে পাশের জগতটাকে যেভাবে দেখেন, সাধারণ মানুষ সেভাবে দেখেনা। সেই অদেখা ভুবন অনেক সুন্দর আর আনন্দময়, সেই ভুবন অনেক সুখের, দুঃখও আছে সেই দুঃখটাও সুখের। যারা লেখেন তারা বিষয়টা জানেন। আবার লেখার কাজটা যে অনেক কঠিন, যারা লেখেন তারা সেই বিষয়টাও জানেন, কখনো কখনো যন্ত্রণারও।
লেখতে চাইছেন লেখতে পারছেন, এই ব্যাপারটা অনেক কষ্টের, অনেক যন্ত্রণার। অনেকেই এই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে লেখালেখি ছেড়ে দেন। আমার এই লেখার প্রথম প্রাপক তারা।
কোন কাজই রাতারাতি সম্ভব না। লেখক হয়ে উঠাও তার ব্যতিক্রম না। অনেকের ক্ষেত্রে অনেক কঠিন। লেখক হয়ে উঠার জন্য অনেক শ্রম আর ত্যাগের প্রয়োজন আছে। যে যতটুকু শ্রম দেবে, তার কাজ তত শানিত হবে, যে যতটুকু তাগ করবে, সে ততটুকু এগিয়ে যাবে। যারা বড় বড় লেখক হয়েছেন এবং আছেন, ভাববেন না, শুধু প্রতিভা দিয়ে উঁনারা এত বড় হয়েছেন, প্রতিভার সাথে শ্রম আর ত্যাগও আছে। আপনি যেহেতু লেখেন, ধরে নেয়া যায়, আপনার প্রতিভা আছে। তাই আপনার আর সাফল্যের মাঝে শুধু আছে শ্রম আর ত্যাগ। শ্রম আর ত্যাগের সাথে লেখে যান, আপনিও বড় লেখক হতে পারবেন। শ্রম আর ত্যাগ এক এক জনের জন্য
এক এক রকম হবে, আমার জন্য শ্রম হচ্ছে সময় খুঁজে লেখে যাওয়া আর ত্যাগ হচ্ছে আমার প্রিয় জিনিস (যেমন অতিরিক্ত ঘুম অথবা অতিরিক্ত রেস্ট) ত্যাগ করা।
আপনি নিয়মিত লেখক হয়ে উঠলেন, আপনার প্রাপ্তি কি? এই প্রাপ্তির কারনেও অনেকেই লেখালেখি থেকে দূরে সরে যায়। আপনি অনেকদিন লিখে যাচ্ছেন, কেউ আপনার লেখা পড়ছেন না, অথবা কেউ আপনার লেখা নিয়ে কটূক্তি করছে অথবা কেউ আপানকে পাত্তা দিচ্ছে না ইত্যাদি এগুলো নিয়ে যদি বেশি ভাবেন, তাহলে আপনি বেশিদিন লেখতে পারবেন না। আপনার মনে রাখতে হবে আপানর লেখা দিয়ে প্রথমত আপনি উপক্রিত হচ্ছেন, আপনি বিচক্ষণ হচ্ছেন, তারপর পাঠক আপানর লেখা পড়ে অনেক কিছু শিখছে, জানছে।তাই আপনি লিখে যাবেন। কে কি বলছে, কি ভাবছে সেটা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে, কিভাবে ভাল লেখা যায় সেটা নিয়ে ভাবুন, সমালোচনা
কাজে লাগান। তবুও লেখা বন্ধ করবেন না। লেখে যাবেন, জেনে রাখুন লিখতে লিখতে লেখক হতে হয়। কেউ আপানর লেখা না শুনুক, নিজের লেখা নিজেকে পড়ে শুনান, নিজের লেখাকে ভালবাসুন, নিজের দেয়ালে, নিজের ব্লগে অথবা লেখালেখির পেজে লেখেন। আপনার লেখাকে
প্রথমত আপনার ভালবাসতে হবে, সেটাই সব চেয়ে বেশি জরুরী। কোন 'লাইক' হইত নাও পরতে পারে, তাতে ক্ষতি নেই, অন্য লেখা লেখবেন, পোস্ট করবেন। কেউ না কেউ আপনার লেখা পড়ে উপক্রিত হবে, তবে সবচেয়ে উপক্রিত হবেন আপনি, আপনি ধীরে ধীরে লেখক হবে উঠবেন।
দ্বিতীয় প্রাপক, যারা আগে লেখতে, এখন আর লেখেন না। আপনি ভেবে দেখেছেন কি, আপনি কত সুন্দর ভাবনা, জানা অজানা বিষয়গুলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারতেন। হয়তো সময়ের অভাবে, কাজের চাপে লেখা কাজ হারিয়ে গেছে, কিন্তু আপনার ভাবনাগুলো কেউ আপনার মত
করে ভাবতে পারবেনা্, তাই আপনার না লেখার কারনে অনেকেই উপক্রিত হচ্ছে না, সব চেয়ে বড় ব্যাপার আপনার মনে ভাবনাগুলো জমে আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে, আবার লেখা শুরু করুন, ভাল লাগবে, অনেকেই অনেক অদেখা ভুবন দেখতে পারবে না।
তৃতীয় প্রাপক, যারা ভাল লেখেন। যারা ভাল লেখেন তারা জানেন তারা ভাল লেখেন, অন্তত আঁচ করতে পারেন। তাদের প্রতি অনুরোধ, অন্য লেখার পাশাপাশি কিভাবে ভাল লেখা যায়, ভাল লেখক হয়ে উঠা যায় তা আমাদের জানান। মনে রাখবেন নতুন লেখকদের মাঝেই আপনার যোগ্য উত্তূরসরি আছে, তাকে একটু সাহায্য করুন, একটি লেখা অনেকের জীবনে অনেক পরিবর্তন আনতে পারে। যারা লেখতে পারে তাদের অনেক অনুপ্রানিত করতে পারে।
আশা করছি যারা লেখতে পারেন তারা লেখে যাবেন। আমাদের অনেক অনেক লেখা উপহার দিবেন আর অনেক জানা অজানার বিষয় আমাদের শেয়ার করেবেন। সবশেষে সবার জন্য ছোট্ট একটা কবিতা উপহার রইল।
এক কবির মৃত্যুতে,
অদেখা স্বপ্নগুলো হারায় পথে,
আকাশগুলো ঠিকানা হারায়,
দুরের ভুবন দূরে থেকে যায়,
পাহাড়গুলো বিষণ্ণ ভীষণ,
সমুদ্রদের আকাশ ভ্রমন,
জ্যোৎস্নার সব দৃশ্যগুলো,
কোথায় যেন হারিয়ে গেল,
দুরের বনের গল্পরা সব,
বনে হারায়, ভীষণ নীরব,
গানের মাঝে নেই কোন সূর,
কবিতাগুলো ব্যদনা বিধুর,
গানের মাঝে নেই কোন সূর,
কবিতাগুলো ব্যদনা বিধুর...
* ভুল বানানগুলো ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখবেন।
Longmont, Colorado
January 26, 2014
সবাই লেখালেখি করতে পারে না, যারা লেখালেখি করেন, তারা সৌভাগ্যবান/সৌভাগ্যবতী। আমি বাড়িয়ে বলছি না, যারা নিয়মিতি লেখেন তারা আসে পাশের জগতটাকে যেভাবে দেখেন, সাধারণ মানুষ সেভাবে দেখেনা। সেই অদেখা ভুবন অনেক সুন্দর আর আনন্দময়, সেই ভুবন অনেক সুখের, দুঃখও আছে সেই দুঃখটাও সুখের। যারা লেখেন তারা বিষয়টা জানেন। আবার লেখার কাজটা যে অনেক কঠিন, যারা লেখেন তারা সেই বিষয়টাও জানেন, কখনো কখনো যন্ত্রণারও।
লেখতে চাইছেন লেখতে পারছেন, এই ব্যাপারটা অনেক কষ্টের, অনেক যন্ত্রণার। অনেকেই এই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে লেখালেখি ছেড়ে দেন। আমার এই লেখার প্রথম প্রাপক তারা।
কোন কাজই রাতারাতি সম্ভব না। লেখক হয়ে উঠাও তার ব্যতিক্রম না। অনেকের ক্ষেত্রে অনেক কঠিন। লেখক হয়ে উঠার জন্য অনেক শ্রম আর ত্যাগের প্রয়োজন আছে। যে যতটুকু শ্রম দেবে, তার কাজ তত শানিত হবে, যে যতটুকু তাগ করবে, সে ততটুকু এগিয়ে যাবে। যারা বড় বড় লেখক হয়েছেন এবং আছেন, ভাববেন না, শুধু প্রতিভা দিয়ে উঁনারা এত বড় হয়েছেন, প্রতিভার সাথে শ্রম আর ত্যাগও আছে। আপনি যেহেতু লেখেন, ধরে নেয়া যায়, আপনার প্রতিভা আছে। তাই আপনার আর সাফল্যের মাঝে শুধু আছে শ্রম আর ত্যাগ। শ্রম আর ত্যাগের সাথে লেখে যান, আপনিও বড় লেখক হতে পারবেন। শ্রম আর ত্যাগ এক এক জনের জন্য
এক এক রকম হবে, আমার জন্য শ্রম হচ্ছে সময় খুঁজে লেখে যাওয়া আর ত্যাগ হচ্ছে আমার প্রিয় জিনিস (যেমন অতিরিক্ত ঘুম অথবা অতিরিক্ত রেস্ট) ত্যাগ করা।
আপনি নিয়মিত লেখক হয়ে উঠলেন, আপনার প্রাপ্তি কি? এই প্রাপ্তির কারনেও অনেকেই লেখালেখি থেকে দূরে সরে যায়। আপনি অনেকদিন লিখে যাচ্ছেন, কেউ আপনার লেখা পড়ছেন না, অথবা কেউ আপনার লেখা নিয়ে কটূক্তি করছে অথবা কেউ আপানকে পাত্তা দিচ্ছে না ইত্যাদি এগুলো নিয়ে যদি বেশি ভাবেন, তাহলে আপনি বেশিদিন লেখতে পারবেন না। আপনার মনে রাখতে হবে আপানর লেখা দিয়ে প্রথমত আপনি উপক্রিত হচ্ছেন, আপনি বিচক্ষণ হচ্ছেন, তারপর পাঠক আপানর লেখা পড়ে অনেক কিছু শিখছে, জানছে।তাই আপনি লিখে যাবেন। কে কি বলছে, কি ভাবছে সেটা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে, কিভাবে ভাল লেখা যায় সেটা নিয়ে ভাবুন, সমালোচনা
কাজে লাগান। তবুও লেখা বন্ধ করবেন না। লেখে যাবেন, জেনে রাখুন লিখতে লিখতে লেখক হতে হয়। কেউ আপানর লেখা না শুনুক, নিজের লেখা নিজেকে পড়ে শুনান, নিজের লেখাকে ভালবাসুন, নিজের দেয়ালে, নিজের ব্লগে অথবা লেখালেখির পেজে লেখেন। আপনার লেখাকে
প্রথমত আপনার ভালবাসতে হবে, সেটাই সব চেয়ে বেশি জরুরী। কোন 'লাইক' হইত নাও পরতে পারে, তাতে ক্ষতি নেই, অন্য লেখা লেখবেন, পোস্ট করবেন। কেউ না কেউ আপনার লেখা পড়ে উপক্রিত হবে, তবে সবচেয়ে উপক্রিত হবেন আপনি, আপনি ধীরে ধীরে লেখক হবে উঠবেন।
দ্বিতীয় প্রাপক, যারা আগে লেখতে, এখন আর লেখেন না। আপনি ভেবে দেখেছেন কি, আপনি কত সুন্দর ভাবনা, জানা অজানা বিষয়গুলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারতেন। হয়তো সময়ের অভাবে, কাজের চাপে লেখা কাজ হারিয়ে গেছে, কিন্তু আপনার ভাবনাগুলো কেউ আপনার মত
করে ভাবতে পারবেনা্, তাই আপনার না লেখার কারনে অনেকেই উপক্রিত হচ্ছে না, সব চেয়ে বড় ব্যাপার আপনার মনে ভাবনাগুলো জমে আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে, আবার লেখা শুরু করুন, ভাল লাগবে, অনেকেই অনেক অদেখা ভুবন দেখতে পারবে না।
তৃতীয় প্রাপক, যারা ভাল লেখেন। যারা ভাল লেখেন তারা জানেন তারা ভাল লেখেন, অন্তত আঁচ করতে পারেন। তাদের প্রতি অনুরোধ, অন্য লেখার পাশাপাশি কিভাবে ভাল লেখা যায়, ভাল লেখক হয়ে উঠা যায় তা আমাদের জানান। মনে রাখবেন নতুন লেখকদের মাঝেই আপনার যোগ্য উত্তূরসরি আছে, তাকে একটু সাহায্য করুন, একটি লেখা অনেকের জীবনে অনেক পরিবর্তন আনতে পারে। যারা লেখতে পারে তাদের অনেক অনুপ্রানিত করতে পারে।
আশা করছি যারা লেখতে পারেন তারা লেখে যাবেন। আমাদের অনেক অনেক লেখা উপহার দিবেন আর অনেক জানা অজানার বিষয় আমাদের শেয়ার করেবেন। সবশেষে সবার জন্য ছোট্ট একটা কবিতা উপহার রইল।
এক কবির মৃত্যুতে,
অদেখা স্বপ্নগুলো হারায় পথে,
আকাশগুলো ঠিকানা হারায়,
দুরের ভুবন দূরে থেকে যায়,
পাহাড়গুলো বিষণ্ণ ভীষণ,
সমুদ্রদের আকাশ ভ্রমন,
জ্যোৎস্নার সব দৃশ্যগুলো,
কোথায় যেন হারিয়ে গেল,
দুরের বনের গল্পরা সব,
বনে হারায়, ভীষণ নীরব,
গানের মাঝে নেই কোন সূর,
কবিতাগুলো ব্যদনা বিধুর,
গানের মাঝে নেই কোন সূর,
কবিতাগুলো ব্যদনা বিধুর...
* ভুল বানানগুলো ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখবেন।
Longmont, Colorado
January 26, 2014
কবি
পাহাড়ের দল,
দাড়িয়ে ঠাঁয় নিশ্চল,
কত উঁচু পৃথিবীর 'পরে,
তপ্ত মাটি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে,
কত বিস্ময়ের সাক্ষী হলো,
সব বিস্ময় তাকে পাহাড় করে দিল,
সভ্যতার বিস্ময়,
অজস্র আকাশেরা কথা কয়,
আকাশের এই তীরে নক্ষত্রের আনাগোনা হয়,
পৃথিবীরা কাছে আসে দুরে সরে যায়,
কত গ্রহ-নক্ষত্রের দল অজানায় হারায়,
কত শত বিস্ময় এই সময়ের তীরে,
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে,
এই সব বিস্ময়ের সাক্ষী তারা হলো,
এই সব বিস্ময় তাদের পাহাড় করে দিল,
এই সব আনন্দ-ব্যাদনা
এই সব বিস্ময়,
এই সব সুরের আনাগোনা,
যত নক্ষত্রেরা কথা কয়,
আমি ছড়িয়ে দিয়েছি তাই,
আমি কবি হয়েছে পাহাড় হই নাই,
কত শত বিস্ময়ের সাক্ষী আমার হৃদয় হলো,
এই সব বিস্ময় আমায় কবি করে দিল...
Longmont. Colorado
January 27, 20114
পাহাড়ের দল,
দাড়িয়ে ঠাঁয় নিশ্চল,
কত উঁচু পৃথিবীর 'পরে,
তপ্ত মাটি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে,
কত বিস্ময়ের সাক্ষী হলো,
সব বিস্ময় তাকে পাহাড় করে দিল,
সভ্যতার বিস্ময়,
অজস্র আকাশেরা কথা কয়,
আকাশের এই তীরে নক্ষত্রের আনাগোনা হয়,
পৃথিবীরা কাছে আসে দুরে সরে যায়,
কত গ্রহ-নক্ষত্রের দল অজানায় হারায়,
কত শত বিস্ময় এই সময়ের তীরে,
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে,
এই সব বিস্ময়ের সাক্ষী তারা হলো,
এই সব বিস্ময় তাদের পাহাড় করে দিল,
এই সব আনন্দ-ব্যাদনা
এই সব বিস্ময়,
এই সব সুরের আনাগোনা,
যত নক্ষত্রেরা কথা কয়,
আমি ছড়িয়ে দিয়েছি তাই,
আমি কবি হয়েছে পাহাড় হই নাই,
কত শত বিস্ময়ের সাক্ষী আমার হৃদয় হলো,
এই সব বিস্ময় আমায় কবি করে দিল...
Longmont. Colorado
January 27, 20114
শিশিরবিন্দু
বহু দিন ধ’রে বহু ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের উপরে
একটি শিশিরবিন্দু।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আজকের ঘটনাটা ঘটেছে অনেকটা তাই। অনেক দিন ধরে, অনেক ব্যায় করে অনেক জায়গায় ঘুরে এসেছি, কিন্তু ঘর থেকে কিছু দূরে এত সুন্দর
জায়গায় থাকতে পারে কল্পনা করেনি।
সাধারণত কোন এক সপ্তাহে দূরে কোথাও গেলে, এর পরের সপ্তাহে অথবা দুই সপ্তাহে কোথাও যাওয়া হয় না। এই সময়ে ঘুম আর ঘুম, বিছানায় এলিয়ে নাটক মুভি দেখা। এরপর আবার দূরে কোথাও। গতবার গ্রীষ্মে অবশ্য প্রায় প্রতি সপ্তাহে কোথাও না কোথাও যাওয়া হয়েছে। এখন প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, বের হবার জো নেই।
গত সপ্তাহে দূরে কোথাও যাবার কারণে এই সপ্তাহে কোথাও যাবার প্ল্যান ছিল না। কিছুটা ব্রেক তার উপর এই রবিবারে সুমির ড্রাইভিং ক্লাস থাকায় কোথাও যাওয়া হয়নি। সকালে উঠে ড্রাইভিং স্কুলে গেলাম। দুই ঘণ্টার রোড প্র্যাকটিস। গত দুই লেসন আমিও সাথে ছিলাম। বসে বসে বোর হবার থেকে গাড়িতে ঘোরা ঢের ভাল।
বাসা থেকে স্কুল পর্যন্ত সুমিই আমাদের গাড়ি চালিয়ে নিয়ে গেল। ধীরে ধীরে অনেক খানি শিখে গেছে। গাড়ি চালানোর প্রথম কয়েক দিন কি যে গেছে, অনেক ঝগড়াও হয়েছে। আমি নাকি বকা দেই বেশি। গাড়ি এলোমেলো চালালেও বকা দেওয়া যাবে না। ভুল করলে কিছু বলা যাবে না, এই সব। যাইহোক কঠিন দিন গেছে। এখন ভালই চালায়। ব্রাশ আপের জন্য স্কুলে ভর্তি করানো আর স্কুলে রোড টেস্টও দিতে পারবে। আজি শেষ লেসন।
গাড়িতে উঠলাম সবাই। আজ এক্সপ্রেস ওয়েতে গাড়ি চালাতে হবে। কিছু ক্ষণের মধ্যে গাড়ি এক্সপ্রেস ওয়ে তে উঠে যাবে। এর আগে ও কখনো এক্সপ্রেস ওয়েতে গাড়ি চালায়।এখানে এক্সপ্রেস ওয়েতে সবচেয়ে দ্রুত গাড়ি চলে। গতির ক্ষেত্রে সব চেয়ে কম লোকাল স্ট্রিট, তারপর অ্যাভেন্যু, তারপর বুল্যূভারড, হাইওয়ে সবশেষে এক্সপ্রেস ওয়ে। এক্সপ্রেস ওয়েতে অনেক সাবধানে গাড়ি চালাতে হয়, একটু ভুলের কারনে অনেক বড় দূর ঘটনা ঘতে যেতে পারে। যেতে পারে মানুষের প্রানও। তাই এক্সপ্রেস ওয়েতে অনেক কিছু অনেক সতর্কতার সাথে চালাতে হয়। সব চেয়ে কঠিন কাজটা হচ্ছে এক্সপ্রেস ওয়েতে উঠা। সুমি এই কাজটা প্রথম করতে যাচ্ছে। সভাবতই অনেক উত্তেজিত।
আমি পিছনে বসে আছি, ভাল যে, ইন্ত্রুক্তরের কাছে আলাদা ব্রেক আছে, সুমি লাইট পাড় হয়ে ঢুকছে এক্সপ্রেস ওয়েতে। ওকে স্পীড বাড়াতে হবে ধীরে ধীরে এবং আসে পাশে গাড়ি দেখে এক্সপ্রেস ওয়ের লেনে ঢুকে পরতে হবে। ও গাড়ির স্পীড বাড়াচ্ছে, অনেক গাড়ি দ্রুত ছুটে যাচ্ছে, যে লেনের উপর ও আছে, সেটা শেষ হয়ে আসছে, ওকে এখনি লেন চাঞ্জ করতে হবে, লেন চাঞ্জও করলো, কিন্তু ও আর এক লেন চাঞ্জ করতে যাচ্ছিলো, আমি উত্তজিত হয়ে বলে ' No, Stay on this lane '! আমার চিৎকারের কারনেই হোক অথবা অন্য কারনে, ভাগ্যিস শেষ পর্যন্ত ও লেন চাঞ্জ করেনি। বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচা গেল।
গাড়ি দ্রুত চলছে। প্রাথমিক উত্তেজনা থেকে বের হয়ে এখন ভালই গাড়ি চালাচ্ছে। ইন্সট্রাকটর বলল , 'You did good job' বলে হাঁসে, আমি মনে মনে বলি বড় বাঁচা বেঁচে গেছি আজ।
এখন আমরা যাচ্ছি পাহাড়ি রাস্তায়। পাহাড়ি রাস্তায়ও আগে কখনোও গাড়ি চালায় নি। আজ যেহেতু শেষ লেসন, তাই যে বিষয়গুলো করা হয় নি, সেগুলোই করা হবে আজ। আমরা জানতাম, এক্সপ্রেস ওয়েতে গাড়ি চালাতে হবে, কিন্তু পাহাড়ি রাস্তায় চালাতে হবে এখন জানলাম, সুমির আজ
জীবনের বড় এবং মজার কিছু অভিজ্ঞতা হয়ে যাচ্ছে। দেখা যাক কেমন করে।
এখানকার পাহাড় গুলো অনেক খাড়া আর ঢালু। কিভাবে এখানে রাস্তা করেছে কে জানে। ইন্সট্রাকটর বলল, এই পাহাড়ি রাস্তা অন্যান্য পাহাড়ি রাস্তা থেকে কঠিন, কিন্তু নতুন গাড়ি চালকদের জন্য ভাল শিক্ষণীয়। রাস্তার লেন গুলো ও সুরু। আমি টাইট হয়ে, গাড়ির ফ্লোরে পা চাপ দিয়ে বসে থাকি। গাড়ি ধীরে ধীরে উঠছে। ভালই চালাচ্ছে, তবে অনেক আস্তে আস্তে, তাই পিছনে গাড়ির লাইন লেগে গেছে। অন্যদের যাবার জন্য জায়গা করে দেবার জন্য আমরা পথের পাশে জায়গা খুঁজছি। ওগুলিকে 'পুল ওভার' বলে। সামনে আবার পরল বাই সাইকেলিস্টের দল। ধীরে ধীরে চলছে গাড়ি আর আমরা থামানোর জায়গা খুঁজছি। অন্য দিক থেকে গাড়ি না আসায় আমরা বাই সাইকেলিস্টেদের ওভার টেক করে চলে গেলাম। ভালই ওভার টেক করলো, এবং কিছু দূর যেতেই থামানোর জায়গা পেয়ে গেলাম। গাড়ি থামতেই অন্য গাড়ি গুলো সাই সাই করে চলে গেল। পিছনে আর কেউ নেই, আমরা আবার উপরে উঠতে শুরু করলাম।
গাড়ি যতই উপরে উঠছে ততই যেন মোড় বাড়ছে, পাহাড়ি রাস্তায় প্রথম ভালই চালাচ্ছে ও। তবে খুব আস্তে আস্তে। অনেক দূর উঠে গিয়েছে আমরা, রাস্তার পাশ থেকে খাড়া নিছে দেখা যায়। ভয়ঙ্কর অবস্থা। পিছনে আবারো গাড়ি জমে গিয়েছে। বেশি জোরে চালাতে পারছে না বলে এমন হচ্ছে। অন্যদের জায়গা দেবার জন্য ইন্সট্রাকটর বলল। কিন্তু সামনে কোথাও পুল ওভার দেখা যাচ্ছে না। কিছু দূর চালানোর পড়ে সামনে একটা দেখা গেল, সুমি ওখানে থামানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যেই টার্ন করে থামাতে গিয়েছে, কিন্তু গাড়ি তত টুকু থামেনি। আমরা তো পুরা থ। ভাগ্যক্রমে ইন্সত্রুচতর পুরো ব্রেক করলো। আমরা ঠিক পড়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে থেমে গেলাম। অসম্ভব অবস্থা!
ওদের হৃদ স্পন্দনের কথা জানি না, তবে আমার হৃদ স্পন্দ অনেক বেড়ে গেল। একটু ব্রেক টাইম। সুমির ললাটে কিছুটা ঘাম। ও পানি খাচ্ছে।
এমন হয় না, যে অনেক ধকলের পড়ে অদ্ভুত কিছু মুহূর্ত আসে? হ্যাঁ, আমাদের উপর দিয়ে ভালই ধকল গেল। গাড়ি থামিয়ে, আমরা পাহাড়ের ধার ঘেঁসে গিয়ে দাঁড়ালাম। আর কি যে অপূর্ব দৃশ্য দেখলাম! আহা! আসাধারন! সুন্দর দৃশ্য গুলো লেখায় ফুটিয়ে তোলা অনেকটা অসম্ভব। যেমন ধরুন জ্যোৎস্নার সৌন্দর্য, সমুদ্রের ভাল লাগা, আকাশে মেঘের ছোট ছোট ভেলার, সূর্যাস্ত আর সূর্য উদয়ের আসাধারন দৃশ্য লেখায় প্রকাশ করা দুরুহ, কিন্তু লেখায় আবেগের ছটা দিয়ে কিছুটা বোঝান যায়। পাহাড়ের এই দিকে এসে হতবাক হয়ে দাড়িয়ে আছি, আর যত দূর চোখ যায় তত দূর দেখছি। পুরো কলোরাডোর উত্তর দক্ষিন আর পূর্ব দিকটা এখান থেকে দেখা যায়। জলমলে দিনে দেখা যায় আরও দূরে। নিচের কিছু ছোট ছোট ঘর দেখা যায়, দূরে দুইটা ল্যাক দেখা যায়, এক্সপ্রেস ওয়েগুলোকে
সমান্তরাল রেখার মত দেখায়, গাড়ি গুলোকে পিঁপড়ের মত। পাহাড়ে আসলেই আমি বুক ভরে শ্বাস নেই, আর দীর্ঘ নিঃশ্বাস পড়ে। হতে অক্সিজেনের অভাবে অথবা এত সুন্দরের কাছে নিজেকে তুচ্ছ মনে হবার কারণে। এদিকে আগে আসি নি বলে অবাক লাগছে অথচ কত দূর দুরান্তেই না গিয়েছি। কত সময় কত পথ পাড়ি দিয়েছি। আর আসাধারন কিছু খুব কাছেই পড়ে আছে।
লংমন্ট, কলোরাডো
January 26, 2014
বহু দিন ধ’রে বহু ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের উপরে
একটি শিশিরবিন্দু।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আজকের ঘটনাটা ঘটেছে অনেকটা তাই। অনেক দিন ধরে, অনেক ব্যায় করে অনেক জায়গায় ঘুরে এসেছি, কিন্তু ঘর থেকে কিছু দূরে এত সুন্দর
জায়গায় থাকতে পারে কল্পনা করেনি।
সাধারণত কোন এক সপ্তাহে দূরে কোথাও গেলে, এর পরের সপ্তাহে অথবা দুই সপ্তাহে কোথাও যাওয়া হয় না। এই সময়ে ঘুম আর ঘুম, বিছানায় এলিয়ে নাটক মুভি দেখা। এরপর আবার দূরে কোথাও। গতবার গ্রীষ্মে অবশ্য প্রায় প্রতি সপ্তাহে কোথাও না কোথাও যাওয়া হয়েছে। এখন প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, বের হবার জো নেই।
গত সপ্তাহে দূরে কোথাও যাবার কারণে এই সপ্তাহে কোথাও যাবার প্ল্যান ছিল না। কিছুটা ব্রেক তার উপর এই রবিবারে সুমির ড্রাইভিং ক্লাস থাকায় কোথাও যাওয়া হয়নি। সকালে উঠে ড্রাইভিং স্কুলে গেলাম। দুই ঘণ্টার রোড প্র্যাকটিস। গত দুই লেসন আমিও সাথে ছিলাম। বসে বসে বোর হবার থেকে গাড়িতে ঘোরা ঢের ভাল।
বাসা থেকে স্কুল পর্যন্ত সুমিই আমাদের গাড়ি চালিয়ে নিয়ে গেল। ধীরে ধীরে অনেক খানি শিখে গেছে। গাড়ি চালানোর প্রথম কয়েক দিন কি যে গেছে, অনেক ঝগড়াও হয়েছে। আমি নাকি বকা দেই বেশি। গাড়ি এলোমেলো চালালেও বকা দেওয়া যাবে না। ভুল করলে কিছু বলা যাবে না, এই সব। যাইহোক কঠিন দিন গেছে। এখন ভালই চালায়। ব্রাশ আপের জন্য স্কুলে ভর্তি করানো আর স্কুলে রোড টেস্টও দিতে পারবে। আজি শেষ লেসন।
গাড়িতে উঠলাম সবাই। আজ এক্সপ্রেস ওয়েতে গাড়ি চালাতে হবে। কিছু ক্ষণের মধ্যে গাড়ি এক্সপ্রেস ওয়ে তে উঠে যাবে। এর আগে ও কখনো এক্সপ্রেস ওয়েতে গাড়ি চালায়।এখানে এক্সপ্রেস ওয়েতে সবচেয়ে দ্রুত গাড়ি চলে। গতির ক্ষেত্রে সব চেয়ে কম লোকাল স্ট্রিট, তারপর অ্যাভেন্যু, তারপর বুল্যূভারড, হাইওয়ে সবশেষে এক্সপ্রেস ওয়ে। এক্সপ্রেস ওয়েতে অনেক সাবধানে গাড়ি চালাতে হয়, একটু ভুলের কারনে অনেক বড় দূর ঘটনা ঘতে যেতে পারে। যেতে পারে মানুষের প্রানও। তাই এক্সপ্রেস ওয়েতে অনেক কিছু অনেক সতর্কতার সাথে চালাতে হয়। সব চেয়ে কঠিন কাজটা হচ্ছে এক্সপ্রেস ওয়েতে উঠা। সুমি এই কাজটা প্রথম করতে যাচ্ছে। সভাবতই অনেক উত্তেজিত।
আমি পিছনে বসে আছি, ভাল যে, ইন্ত্রুক্তরের কাছে আলাদা ব্রেক আছে, সুমি লাইট পাড় হয়ে ঢুকছে এক্সপ্রেস ওয়েতে। ওকে স্পীড বাড়াতে হবে ধীরে ধীরে এবং আসে পাশে গাড়ি দেখে এক্সপ্রেস ওয়ের লেনে ঢুকে পরতে হবে। ও গাড়ির স্পীড বাড়াচ্ছে, অনেক গাড়ি দ্রুত ছুটে যাচ্ছে, যে লেনের উপর ও আছে, সেটা শেষ হয়ে আসছে, ওকে এখনি লেন চাঞ্জ করতে হবে, লেন চাঞ্জও করলো, কিন্তু ও আর এক লেন চাঞ্জ করতে যাচ্ছিলো, আমি উত্তজিত হয়ে বলে ' No, Stay on this lane '! আমার চিৎকারের কারনেই হোক অথবা অন্য কারনে, ভাগ্যিস শেষ পর্যন্ত ও লেন চাঞ্জ করেনি। বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচা গেল।
গাড়ি দ্রুত চলছে। প্রাথমিক উত্তেজনা থেকে বের হয়ে এখন ভালই গাড়ি চালাচ্ছে। ইন্সট্রাকটর বলল , 'You did good job' বলে হাঁসে, আমি মনে মনে বলি বড় বাঁচা বেঁচে গেছি আজ।
এখন আমরা যাচ্ছি পাহাড়ি রাস্তায়। পাহাড়ি রাস্তায়ও আগে কখনোও গাড়ি চালায় নি। আজ যেহেতু শেষ লেসন, তাই যে বিষয়গুলো করা হয় নি, সেগুলোই করা হবে আজ। আমরা জানতাম, এক্সপ্রেস ওয়েতে গাড়ি চালাতে হবে, কিন্তু পাহাড়ি রাস্তায় চালাতে হবে এখন জানলাম, সুমির আজ
জীবনের বড় এবং মজার কিছু অভিজ্ঞতা হয়ে যাচ্ছে। দেখা যাক কেমন করে।
এখানকার পাহাড় গুলো অনেক খাড়া আর ঢালু। কিভাবে এখানে রাস্তা করেছে কে জানে। ইন্সট্রাকটর বলল, এই পাহাড়ি রাস্তা অন্যান্য পাহাড়ি রাস্তা থেকে কঠিন, কিন্তু নতুন গাড়ি চালকদের জন্য ভাল শিক্ষণীয়। রাস্তার লেন গুলো ও সুরু। আমি টাইট হয়ে, গাড়ির ফ্লোরে পা চাপ দিয়ে বসে থাকি। গাড়ি ধীরে ধীরে উঠছে। ভালই চালাচ্ছে, তবে অনেক আস্তে আস্তে, তাই পিছনে গাড়ির লাইন লেগে গেছে। অন্যদের যাবার জন্য জায়গা করে দেবার জন্য আমরা পথের পাশে জায়গা খুঁজছি। ওগুলিকে 'পুল ওভার' বলে। সামনে আবার পরল বাই সাইকেলিস্টের দল। ধীরে ধীরে চলছে গাড়ি আর আমরা থামানোর জায়গা খুঁজছি। অন্য দিক থেকে গাড়ি না আসায় আমরা বাই সাইকেলিস্টেদের ওভার টেক করে চলে গেলাম। ভালই ওভার টেক করলো, এবং কিছু দূর যেতেই থামানোর জায়গা পেয়ে গেলাম। গাড়ি থামতেই অন্য গাড়ি গুলো সাই সাই করে চলে গেল। পিছনে আর কেউ নেই, আমরা আবার উপরে উঠতে শুরু করলাম।
গাড়ি যতই উপরে উঠছে ততই যেন মোড় বাড়ছে, পাহাড়ি রাস্তায় প্রথম ভালই চালাচ্ছে ও। তবে খুব আস্তে আস্তে। অনেক দূর উঠে গিয়েছে আমরা, রাস্তার পাশ থেকে খাড়া নিছে দেখা যায়। ভয়ঙ্কর অবস্থা। পিছনে আবারো গাড়ি জমে গিয়েছে। বেশি জোরে চালাতে পারছে না বলে এমন হচ্ছে। অন্যদের জায়গা দেবার জন্য ইন্সট্রাকটর বলল। কিন্তু সামনে কোথাও পুল ওভার দেখা যাচ্ছে না। কিছু দূর চালানোর পড়ে সামনে একটা দেখা গেল, সুমি ওখানে থামানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। যেই টার্ন করে থামাতে গিয়েছে, কিন্তু গাড়ি তত টুকু থামেনি। আমরা তো পুরা থ। ভাগ্যক্রমে ইন্সত্রুচতর পুরো ব্রেক করলো। আমরা ঠিক পড়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে থেমে গেলাম। অসম্ভব অবস্থা!
ওদের হৃদ স্পন্দনের কথা জানি না, তবে আমার হৃদ স্পন্দ অনেক বেড়ে গেল। একটু ব্রেক টাইম। সুমির ললাটে কিছুটা ঘাম। ও পানি খাচ্ছে।
এমন হয় না, যে অনেক ধকলের পড়ে অদ্ভুত কিছু মুহূর্ত আসে? হ্যাঁ, আমাদের উপর দিয়ে ভালই ধকল গেল। গাড়ি থামিয়ে, আমরা পাহাড়ের ধার ঘেঁসে গিয়ে দাঁড়ালাম। আর কি যে অপূর্ব দৃশ্য দেখলাম! আহা! আসাধারন! সুন্দর দৃশ্য গুলো লেখায় ফুটিয়ে তোলা অনেকটা অসম্ভব। যেমন ধরুন জ্যোৎস্নার সৌন্দর্য, সমুদ্রের ভাল লাগা, আকাশে মেঘের ছোট ছোট ভেলার, সূর্যাস্ত আর সূর্য উদয়ের আসাধারন দৃশ্য লেখায় প্রকাশ করা দুরুহ, কিন্তু লেখায় আবেগের ছটা দিয়ে কিছুটা বোঝান যায়। পাহাড়ের এই দিকে এসে হতবাক হয়ে দাড়িয়ে আছি, আর যত দূর চোখ যায় তত দূর দেখছি। পুরো কলোরাডোর উত্তর দক্ষিন আর পূর্ব দিকটা এখান থেকে দেখা যায়। জলমলে দিনে দেখা যায় আরও দূরে। নিচের কিছু ছোট ছোট ঘর দেখা যায়, দূরে দুইটা ল্যাক দেখা যায়, এক্সপ্রেস ওয়েগুলোকে
সমান্তরাল রেখার মত দেখায়, গাড়ি গুলোকে পিঁপড়ের মত। পাহাড়ে আসলেই আমি বুক ভরে শ্বাস নেই, আর দীর্ঘ নিঃশ্বাস পড়ে। হতে অক্সিজেনের অভাবে অথবা এত সুন্দরের কাছে নিজেকে তুচ্ছ মনে হবার কারণে। এদিকে আগে আসি নি বলে অবাক লাগছে অথচ কত দূর দুরান্তেই না গিয়েছি। কত সময় কত পথ পাড়ি দিয়েছি। আর আসাধারন কিছু খুব কাছেই পড়ে আছে।
লংমন্ট, কলোরাডো
January 26, 2014
জননী এবং জন্মভূমি
এটাই কি স্বাভাবিক না?
তুমি বড় হয়ে উঠছ,
জননী তোমার বুড়ো হয়ে উঠছে,
দৃষ্টি তাঁর ক্ষীন হয়ে আসছে,
তোমাকে হয়তো আর কোলে তুলতে পারছেনা,
কেননা তুমি অনেক বড় হয়ে উঠছ,
কিন্তু তুমি এত টুকুন ছিলে,
খুব ছোটো ছিলে,
দৃষ্টি খুব বেশি দুরে যেত না,
তাঁর চোখ দিয়ে তুমি পৃথিবী দেখেছ,
তার হাত ধরে হাটতে শিখেছ,
এটাই খুব স্বাভাবিক তুমি বড় হয়ে উঠছ,
জননী বুড়ো হয়ে উঠছে,
কেন এটা স্বাভাবিক হতে পারে না?
আজ তোমার দৃষ্টি দিয়ে সে পৃথিবী দেখবে না?
তোমার হাত ধরে বাইরে যাবে না?
উল্লাস করবে না, হাসবে না, বাঁচবে না?
এটাই স্বাভাবিক হবে না কেন!
যদি তুমি তাঁর চুলে হাত বুলাও,
মুখে খাবার তুলে দাও,
একটু হাঁসি ফোঁটাও,
কেননা তুমি যখন অসুস্থ ছিলে
তোমার গাঁয়ে জননী হাত বুলিয়ে দিয়েছে
খাবার তুলে দিয়েছে,
হাঁসি ফোঁটানোর জন্য অনেক কেঁদেছে,
যখন ছোটো ছিলে তুমি
কত কিছু দরকার ছিল তোমার,
আজ জননীর বয়স বেড়েছে অনেক
সবচেয়ে বেশি তোমাকে তার দরকার,
এখনো কি সময় হয়নি তোমার,
কিছুটা ঋণ হাঁসি মুখে তাঁকে ফেরত দেবার?
তোমার জন্মভূমি মায়েরি মত,
দেশকে মনে কোরো মাকে মনে কর যত,
সে তো মায়েরও জননী ,
সবার জন্মদাত্রীকে কেন মা বলে ভাবনি ?
অস্থি-মাংস-সার তোমার শরীরে,
মাটির নির্যাসে গড়ে উঠেছে ধীরে ধীরে,
তোমাকে পরিচিত করেছে পৃথিবীর বুকে ,
যেখানেই থাক দুখে আর সুখে,
এটাই যেন স্বাভাবিক হয়, এটাই যেন সহজাত হয়,
জননী এবং জন্মভূমি যেন হৃদয়ে আর প্রাণে স্থান পায়…
এটাই কি স্বাভাবিক না?
তুমি বড় হয়ে উঠছ,
জননী তোমার বুড়ো হয়ে উঠছে,
দৃষ্টি তাঁর ক্ষীন হয়ে আসছে,
তোমাকে হয়তো আর কোলে তুলতে পারছেনা,
কেননা তুমি অনেক বড় হয়ে উঠছ,
কিন্তু তুমি এত টুকুন ছিলে,
খুব ছোটো ছিলে,
দৃষ্টি খুব বেশি দুরে যেত না,
তাঁর চোখ দিয়ে তুমি পৃথিবী দেখেছ,
তার হাত ধরে হাটতে শিখেছ,
এটাই খুব স্বাভাবিক তুমি বড় হয়ে উঠছ,
জননী বুড়ো হয়ে উঠছে,
কেন এটা স্বাভাবিক হতে পারে না?
আজ তোমার দৃষ্টি দিয়ে সে পৃথিবী দেখবে না?
তোমার হাত ধরে বাইরে যাবে না?
উল্লাস করবে না, হাসবে না, বাঁচবে না?
এটাই স্বাভাবিক হবে না কেন!
যদি তুমি তাঁর চুলে হাত বুলাও,
মুখে খাবার তুলে দাও,
একটু হাঁসি ফোঁটাও,
কেননা তুমি যখন অসুস্থ ছিলে
তোমার গাঁয়ে জননী হাত বুলিয়ে দিয়েছে
খাবার তুলে দিয়েছে,
হাঁসি ফোঁটানোর জন্য অনেক কেঁদেছে,
যখন ছোটো ছিলে তুমি
কত কিছু দরকার ছিল তোমার,
আজ জননীর বয়স বেড়েছে অনেক
সবচেয়ে বেশি তোমাকে তার দরকার,
এখনো কি সময় হয়নি তোমার,
কিছুটা ঋণ হাঁসি মুখে তাঁকে ফেরত দেবার?
তোমার জন্মভূমি মায়েরি মত,
দেশকে মনে কোরো মাকে মনে কর যত,
সে তো মায়েরও জননী ,
সবার জন্মদাত্রীকে কেন মা বলে ভাবনি ?
অস্থি-মাংস-সার তোমার শরীরে,
মাটির নির্যাসে গড়ে উঠেছে ধীরে ধীরে,
তোমাকে পরিচিত করেছে পৃথিবীর বুকে ,
যেখানেই থাক দুখে আর সুখে,
এটাই যেন স্বাভাবিক হয়, এটাই যেন সহজাত হয়,
জননী এবং জন্মভূমি যেন হৃদয়ে আর প্রাণে স্থান পায়…
মৃত্যু নিয়ে আর একটি কবিতা লিখি
...মৃত্যু নিয়ে আর একটি কবিতা লিখি,
যখনি আমি অনন্ত আকাশ দেখি,
মাইলের পর মাইল জুড়ে,
এক দিগন্ত থেকে আর এক দিগন্ত দুরে,
ছেয়ে আছে নক্ষত্রেরা,
ছেয়ে আছে কিছু, যা যায়না ধরা,
তাদের মাঝে থেকে যায় কত,
অযুত নিযুত ক্রোশের অনেক দুরত্ব,
সেই দুরত্বে হিম শীতল ঠান্ডা আছে,
তারাদের আলো কখনো কি সেখানে পৌঁছে?
সেই দুরত্বে দেখা যায় না কোনো আলো,
দেখা যায় শুধু অন্ধকার, আঁধারের কালো,
যতোই দুরে যায়, দূর নিস্তব্দতায়,
এই আঁধার হিম শীতল অন্ধকারময়,
এই রাজ্যের নাম মৃত্যু মনে হয় ,
সেই মৃত্যু যদি স্পর্শ করে আমায়
আমার দুটি চোখ বুঝে আসে নেমে,
দুটি চোখে রাজ্যের আঁধার নামে,
আঁধারের বুকে অসংখ্য তারা জ্বলে,
চিরতরে এই দুরে চলে যাওয়াকে মৃত্যু বলে...
...মৃত্যু নিয়ে আর একটি কবিতা লিখি,
যখনি আমি অনন্ত আকাশ দেখি,
মাইলের পর মাইল জুড়ে,
এক দিগন্ত থেকে আর এক দিগন্ত দুরে,
ছেয়ে আছে নক্ষত্রেরা,
ছেয়ে আছে কিছু, যা যায়না ধরা,
তাদের মাঝে থেকে যায় কত,
অযুত নিযুত ক্রোশের অনেক দুরত্ব,
সেই দুরত্বে হিম শীতল ঠান্ডা আছে,
তারাদের আলো কখনো কি সেখানে পৌঁছে?
সেই দুরত্বে দেখা যায় না কোনো আলো,
দেখা যায় শুধু অন্ধকার, আঁধারের কালো,
যতোই দুরে যায়, দূর নিস্তব্দতায়,
এই আঁধার হিম শীতল অন্ধকারময়,
এই রাজ্যের নাম মৃত্যু মনে হয় ,
সেই মৃত্যু যদি স্পর্শ করে আমায়
আমার দুটি চোখ বুঝে আসে নেমে,
দুটি চোখে রাজ্যের আঁধার নামে,
আঁধারের বুকে অসংখ্য তারা জ্বলে,
চিরতরে এই দুরে চলে যাওয়াকে মৃত্যু বলে...
যে সব কারনে আমি লেখক হতে পারিনি
আমি কেন লেখক হতে পারি নি, তার বেশ কিছু কারন আছে। যেমন ধরুন, আমি লেখালেখি নিয়ে অনেক আলসেমি করি। পড়ে দেখব বা পড়ে লেখব করতে করতে অনেক লেখাই হারিয়ে গিয়েছে। লেখা ফেলে রাখার অন্যতম কারন আলসেমি, স্রেফ আলসেমি। কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়। আমি আরাম করতে গিয়ে, লেখা হারিয়ে ফেলেছি। অনেক লেখাই অনেক কষ্ট করেও আর ফিরিয়ে আনতে পারিনি। প্রতিটি মুহূর্তের লেখা আছে, স্মৃতিতে সেই মুহূর্তগুলো কিছুটা বেঁচে থাকে, পরে সেগুলো হারিয়ে যায়, খাতায় অথবা অন্য কোথাও না লিখে রাখলে, অন্য মুহূর্তের ভীড়ে হারিয়ে যায়।
এমনো হয়েছে যে, কিছু লেখা আসছে, কিন্তু আলসেমির কারনে লেখা হচ্ছে না, তাই মোবাইলে লেখার শুরুটা লিখে রাখি, পরে লেখব ভেবে। কিন্তু পরের সময়টা সচরাচর আসে না, আসলেও সেই লেখাটা সেই রকম করে আর লেখতে পারি না। কেননা সেই লেখার মুহূর্তটা সময়ের সাগরে হারিয়ে গেছে।
আমার কাছে মনে হয়, লেখালেখি করতে যে পরিমান ধৈর্য থাকা প্রয়োজন, ততটুকু আমার নেই। বিশেষ করে গল্প, উপন্যাস লেখতে অনেক অনেক ধৈর্যের প্রয়োজন। কোন গল্প শুরু করা, সেই গল্প অনেক সময় চালিয়ে যাওয়া, কখনো থামা, আবার শুরু করা। কত গল্পের শুরু করেছি তার ইয়াত্তা নেই,কিন্তু চালিয়ে যাওয়া হইনি। কোথাও থেমেছি কিন্তু পুনঃরায় শুরু করা হয় নি।
অনেক লেখায় আমি তরিঘড়ি করে শেষ করে ফেলেছি। এক গল্পে ১৫/১৬ লাইনের মধ্যে গল্পের ইতি টেনে ফেলেছি। কিন্তু ওভাবে আমি চিন্তা করেনি,
প্লট করা ছিল, তারাহুড়ো করে গল্পের শেষ করে ফেলেছি। আরও সময় দিলে হয়তো গল্প এগোত, আমি সময়ই দেইনি, গল্প ও অল্পতেই শেষ হয়ে গিয়েছে।
আমার কাছে মাঝে মাঝে মনে হয়, তারাহুড়ো করে লেখা শেষ করি বলে, আমি বেশির ভাগ সময় কবিতা লেখেছি এবং লেখি। কবিতা লেখতে খুব কম সময় লাগে এবং অল্পতেই অনেক কিছু বলা যায়, অনেক কিছু বুঝানো যায়। এমনো হয়েছে আমি কয়েক মিনিটে একটা দুইটা কবিতা লিখে ফেলেছি। আসে পাশে চিরকুট থাকলে, তাতে লিখে রেখেছি, সাদা কাগজ দেখলে আমার মাথা খারাপ হয়ে যেত কিছু লেখার জন্য, কবিতার কিছু কথা হুট করেই সাজানো যেত, কিন্তু গল্প তো আর হুট করে হয় না, চিরকুটেও রাখা যায় না।
লেখায় ব্রেক পরলে আমার লেখা হয় না, যেটা আগেও বলেছি, কিন্তু কোন লেখা আমি লেখে রেখেছি খাতায় অথবা মোবাইলে, সেই লেখাও আমার ধরা হয় না, টাইপ করে যে সেভ করে রাখব, সেটাও করতে পারি না। ভাবি, লিখে রাখা লেখা টাইপ করব, বরং নতুন লেখা লেখি, যেগুলো লেখা হয়েছে, সেগুলোতো লেখাই আছে, ওগুলো পরে দেখা যাবে। পরে আর দেখা হয় না, নতুন লেখার ভীড়ে পুরনো লেখা অবহেলিত।
লেখার জন্য প্রতিভার প্রয়োজন আছে, সেই জিনিসটায় আমার বেশ অভাব বোধ করি। আমি কখনোই তেমন প্রতিভাবান ছিলাম না, তাই হয়তো লেখতে গিয়ে লেখা ফুরিয়ে গেছে, প্রথম আর শেষটা দেখেছি ঠিকই, কিন্তু মাঝের অংশটায় গোলমেলে ছিল।
ভাল স্টুডেন্ট মানেই কিন্তু ভাল প্রতিভা না, তবে ভাল স্টুডেন্ট হলে ধরে নেয়া যায়, তার ভিতরে কিছু অর্জনের যথেষ্ট স্পৃহা আছে, সে জানে কিভাবে কিছু অর্জন করতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে, খুব কম ভাল স্টুডেন্টরাই সাহিত্য জগতে আসে, যারা আসেন, তারা কিন্তু অনেক ভাল করেন। যদিও আমি একদমই ভাল স্টুডেন্ট না, আমার ভিতরে গুছানো ভাবটাও নেই। প্রতিভার কোন স্কুল নেই, তবে বিচক্ষণতাকে শানিত করা যায়। চার পাশের জগতটাকে গভীর ভাবে লক্ষ্য করতে শিখতে হয়, জানতে হয়, তা হলেই না লেখক হওয়া যায়। যে লেখকের বিচক্ষণতাকে যত বেশি, তার লেখার গভীরতা ততখানিই। আমি এখনো বিচক্ষণ হয়ে উঠতে পারি নি, লেখক হওয়াও হয়ে উঠেনি।
লেখতে গেলে আর একটি জিনিস খুব প্রয়োজনঃ বই পরা। প্রচুর বই পরা, হরেক রকম লেখা পরা। আগে প্রচুর বই পরতাম, হাতের নাগালে যা পেতাম তাই পরতাম। পড়ার বইয়ের চেয়ে গল্প কবিতার বই বেশি পরতাম। পাল্লা দিয়েও বই পরতাম। কেউ এত মোটা বই পড়েছে, আমি তার চেয়ে বেশি মোটা বই পরতাম। কিন্তু বেশ কিছু দিন আগের মত
করে গল্প, উপন্যাস পড়া হয়ে উঠছে না। এর একটা কারন হচ্ছে, অন্য কিছু পরলে আমার লেখা বন্ধ্য হয়ে যায়।মনে হয় লেখা কিছুই হচ্ছে না, কি সব লেখছি।এই নিয়ে খুব সমস্যায় আছি বেশ কিছু দিন। আর একটা কারন, সময়। খুবই কম সময় পাই, কাজ আর কাজ। সময় হয়ে উঠে না তেমন। লেখা বন্ধ্য হয়ে যাওয়া একটা বয়াবহ ব্যাপার, লেখা বন্ধ্য হবার ভয়েই হোক কিংবা সময়ের অভাবেই হোক বই পড়া হচ্ছে কম, যেটা মোটেই গ্রহন যোগ্য না। লেখতে গেলে প্রচুর বই পড়া প্রয়োজন, নিয়মিত বই পড়া প্রয়োজন।
এখনকার সময়ে লেখতে গেলে, টেকনোলোজি জানা প্রয়োজন আছে। ডিজিটাল মিডিয়ার কারনে, বাংলা লেখা জানা অনেকটা বাধ্যতামূলক। নিজের ব্লগে অথবা পেজে পোস্ট করার জন্য বাংলা লেখা জানতে হবে। আমি অনেক দেরি করে বাংলা লেখা শিখেছি। বাংলা লেখতে প্রচুর সময় লাগে, সময়টাই কম, লেখতে গিয়ে হয়রান, ধৈর্য হারা।
যেকোনো সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপ নাকি, সমস্যাটা কি, সেটা বের করা। আমি সমস্যাগুলো বের করেছে, পরের ধাপ গুলোতো পাচ্ছি না, সমাধান হচ্ছে কই! সমাধান হচ্ছে না।এত কিছু পাড়ি দিতে পারছিনা বলেই লেখক হতে পারছিনা। অনেকে বলতে পারেন, তাহলে লেখার দরকারটা কি। না লেখলেই হয়। সমস্যাও নেই, সমাধান খোঁজারও প্রয়োজন নেই। তাহলে আপনি আমার আসল সমস্যাটা বুঝেননি, আসল সমস্যা হচ্ছে, আমি আমি না লেখে থাকতে পারব না, লেখতে আমাকে হবেই, কিন্তু আমি ঠিক মত লেখতে পারছি না। বাঁচার জন্য লেখতে হবে, বাঁচানোর জন্য লেখতে হবে। চুপ মেরে গেলেন তো, সমস্যা শুনলে সবাই চুপ মেরে যায়।
আমি কেন লেখক হতে পারি নি, তার বেশ কিছু কারন আছে। যেমন ধরুন, আমি লেখালেখি নিয়ে অনেক আলসেমি করি। পড়ে দেখব বা পড়ে লেখব করতে করতে অনেক লেখাই হারিয়ে গিয়েছে। লেখা ফেলে রাখার অন্যতম কারন আলসেমি, স্রেফ আলসেমি। কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়। আমি আরাম করতে গিয়ে, লেখা হারিয়ে ফেলেছি। অনেক লেখাই অনেক কষ্ট করেও আর ফিরিয়ে আনতে পারিনি। প্রতিটি মুহূর্তের লেখা আছে, স্মৃতিতে সেই মুহূর্তগুলো কিছুটা বেঁচে থাকে, পরে সেগুলো হারিয়ে যায়, খাতায় অথবা অন্য কোথাও না লিখে রাখলে, অন্য মুহূর্তের ভীড়ে হারিয়ে যায়।
এমনো হয়েছে যে, কিছু লেখা আসছে, কিন্তু আলসেমির কারনে লেখা হচ্ছে না, তাই মোবাইলে লেখার শুরুটা লিখে রাখি, পরে লেখব ভেবে। কিন্তু পরের সময়টা সচরাচর আসে না, আসলেও সেই লেখাটা সেই রকম করে আর লেখতে পারি না। কেননা সেই লেখার মুহূর্তটা সময়ের সাগরে হারিয়ে গেছে।
আমার কাছে মনে হয়, লেখালেখি করতে যে পরিমান ধৈর্য থাকা প্রয়োজন, ততটুকু আমার নেই। বিশেষ করে গল্প, উপন্যাস লেখতে অনেক অনেক ধৈর্যের প্রয়োজন। কোন গল্প শুরু করা, সেই গল্প অনেক সময় চালিয়ে যাওয়া, কখনো থামা, আবার শুরু করা। কত গল্পের শুরু করেছি তার ইয়াত্তা নেই,কিন্তু চালিয়ে যাওয়া হইনি। কোথাও থেমেছি কিন্তু পুনঃরায় শুরু করা হয় নি।
অনেক লেখায় আমি তরিঘড়ি করে শেষ করে ফেলেছি। এক গল্পে ১৫/১৬ লাইনের মধ্যে গল্পের ইতি টেনে ফেলেছি। কিন্তু ওভাবে আমি চিন্তা করেনি,
প্লট করা ছিল, তারাহুড়ো করে গল্পের শেষ করে ফেলেছি। আরও সময় দিলে হয়তো গল্প এগোত, আমি সময়ই দেইনি, গল্প ও অল্পতেই শেষ হয়ে গিয়েছে।
আমার কাছে মাঝে মাঝে মনে হয়, তারাহুড়ো করে লেখা শেষ করি বলে, আমি বেশির ভাগ সময় কবিতা লেখেছি এবং লেখি। কবিতা লেখতে খুব কম সময় লাগে এবং অল্পতেই অনেক কিছু বলা যায়, অনেক কিছু বুঝানো যায়। এমনো হয়েছে আমি কয়েক মিনিটে একটা দুইটা কবিতা লিখে ফেলেছি। আসে পাশে চিরকুট থাকলে, তাতে লিখে রেখেছি, সাদা কাগজ দেখলে আমার মাথা খারাপ হয়ে যেত কিছু লেখার জন্য, কবিতার কিছু কথা হুট করেই সাজানো যেত, কিন্তু গল্প তো আর হুট করে হয় না, চিরকুটেও রাখা যায় না।
লেখায় ব্রেক পরলে আমার লেখা হয় না, যেটা আগেও বলেছি, কিন্তু কোন লেখা আমি লেখে রেখেছি খাতায় অথবা মোবাইলে, সেই লেখাও আমার ধরা হয় না, টাইপ করে যে সেভ করে রাখব, সেটাও করতে পারি না। ভাবি, লিখে রাখা লেখা টাইপ করব, বরং নতুন লেখা লেখি, যেগুলো লেখা হয়েছে, সেগুলোতো লেখাই আছে, ওগুলো পরে দেখা যাবে। পরে আর দেখা হয় না, নতুন লেখার ভীড়ে পুরনো লেখা অবহেলিত।
লেখার জন্য প্রতিভার প্রয়োজন আছে, সেই জিনিসটায় আমার বেশ অভাব বোধ করি। আমি কখনোই তেমন প্রতিভাবান ছিলাম না, তাই হয়তো লেখতে গিয়ে লেখা ফুরিয়ে গেছে, প্রথম আর শেষটা দেখেছি ঠিকই, কিন্তু মাঝের অংশটায় গোলমেলে ছিল।
ভাল স্টুডেন্ট মানেই কিন্তু ভাল প্রতিভা না, তবে ভাল স্টুডেন্ট হলে ধরে নেয়া যায়, তার ভিতরে কিছু অর্জনের যথেষ্ট স্পৃহা আছে, সে জানে কিভাবে কিছু অর্জন করতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে, খুব কম ভাল স্টুডেন্টরাই সাহিত্য জগতে আসে, যারা আসেন, তারা কিন্তু অনেক ভাল করেন। যদিও আমি একদমই ভাল স্টুডেন্ট না, আমার ভিতরে গুছানো ভাবটাও নেই। প্রতিভার কোন স্কুল নেই, তবে বিচক্ষণতাকে শানিত করা যায়। চার পাশের জগতটাকে গভীর ভাবে লক্ষ্য করতে শিখতে হয়, জানতে হয়, তা হলেই না লেখক হওয়া যায়। যে লেখকের বিচক্ষণতাকে যত বেশি, তার লেখার গভীরতা ততখানিই। আমি এখনো বিচক্ষণ হয়ে উঠতে পারি নি, লেখক হওয়াও হয়ে উঠেনি।
লেখতে গেলে আর একটি জিনিস খুব প্রয়োজনঃ বই পরা। প্রচুর বই পরা, হরেক রকম লেখা পরা। আগে প্রচুর বই পরতাম, হাতের নাগালে যা পেতাম তাই পরতাম। পড়ার বইয়ের চেয়ে গল্প কবিতার বই বেশি পরতাম। পাল্লা দিয়েও বই পরতাম। কেউ এত মোটা বই পড়েছে, আমি তার চেয়ে বেশি মোটা বই পরতাম। কিন্তু বেশ কিছু দিন আগের মত
করে গল্প, উপন্যাস পড়া হয়ে উঠছে না। এর একটা কারন হচ্ছে, অন্য কিছু পরলে আমার লেখা বন্ধ্য হয়ে যায়।মনে হয় লেখা কিছুই হচ্ছে না, কি সব লেখছি।এই নিয়ে খুব সমস্যায় আছি বেশ কিছু দিন। আর একটা কারন, সময়। খুবই কম সময় পাই, কাজ আর কাজ। সময় হয়ে উঠে না তেমন। লেখা বন্ধ্য হয়ে যাওয়া একটা বয়াবহ ব্যাপার, লেখা বন্ধ্য হবার ভয়েই হোক কিংবা সময়ের অভাবেই হোক বই পড়া হচ্ছে কম, যেটা মোটেই গ্রহন যোগ্য না। লেখতে গেলে প্রচুর বই পড়া প্রয়োজন, নিয়মিত বই পড়া প্রয়োজন।
এখনকার সময়ে লেখতে গেলে, টেকনোলোজি জানা প্রয়োজন আছে। ডিজিটাল মিডিয়ার কারনে, বাংলা লেখা জানা অনেকটা বাধ্যতামূলক। নিজের ব্লগে অথবা পেজে পোস্ট করার জন্য বাংলা লেখা জানতে হবে। আমি অনেক দেরি করে বাংলা লেখা শিখেছি। বাংলা লেখতে প্রচুর সময় লাগে, সময়টাই কম, লেখতে গিয়ে হয়রান, ধৈর্য হারা।
যেকোনো সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপ নাকি, সমস্যাটা কি, সেটা বের করা। আমি সমস্যাগুলো বের করেছে, পরের ধাপ গুলোতো পাচ্ছি না, সমাধান হচ্ছে কই! সমাধান হচ্ছে না।এত কিছু পাড়ি দিতে পারছিনা বলেই লেখক হতে পারছিনা। অনেকে বলতে পারেন, তাহলে লেখার দরকারটা কি। না লেখলেই হয়। সমস্যাও নেই, সমাধান খোঁজারও প্রয়োজন নেই। তাহলে আপনি আমার আসল সমস্যাটা বুঝেননি, আসল সমস্যা হচ্ছে, আমি আমি না লেখে থাকতে পারব না, লেখতে আমাকে হবেই, কিন্তু আমি ঠিক মত লেখতে পারছি না। বাঁচার জন্য লেখতে হবে, বাঁচানোর জন্য লেখতে হবে। চুপ মেরে গেলেন তো, সমস্যা শুনলে সবাই চুপ মেরে যায়।
জীবন
...আগত মুহূর্তে কি হবে
জানি না বলেই জীবন এত লোমহর্ষক,
আমি এক অবাক দর্শক,
সময়ের হাত ধরে অলিগলি চলা,
না গল্পগুলো চলতে চলতে বলা,
আমি হেঁসেছি,
আমি হাঁসতে হাঁসতে গল্প বলেছি,
আমি কেঁদেছি,
কাঁদতে কাঁদতে গল্প লেখেছি,
আমি চুপচাপ থেকে দেখেছি
দিনগুলো বদলে যেতে,
নিজের ভিতরে খুঁজেছি
পুরনো আমিকে খুঁজে পেতে,
সময়ের হাত ধরে
বদলে যাচ্ছে জীবন,
কেউ জানে না
আগত মুহূর্তটি কেমন,
যদি কেউ তাকে জানতে পেত,
জীবন কি আর জীবন হত...
...আগত মুহূর্তে কি হবে
জানি না বলেই জীবন এত লোমহর্ষক,
আমি এক অবাক দর্শক,
সময়ের হাত ধরে অলিগলি চলা,
না গল্পগুলো চলতে চলতে বলা,
আমি হেঁসেছি,
আমি হাঁসতে হাঁসতে গল্প বলেছি,
আমি কেঁদেছি,
কাঁদতে কাঁদতে গল্প লেখেছি,
আমি চুপচাপ থেকে দেখেছি
দিনগুলো বদলে যেতে,
নিজের ভিতরে খুঁজেছি
পুরনো আমিকে খুঁজে পেতে,
সময়ের হাত ধরে
বদলে যাচ্ছে জীবন,
কেউ জানে না
আগত মুহূর্তটি কেমন,
যদি কেউ তাকে জানতে পেত,
জীবন কি আর জীবন হত...
কুয়াশা
কুয়াশাছন্ন সকাল। ঘন কুয়াশা। এখানেও কুয়াশা আসে। বেশি দূরে দেখা যায় না। আসতে আসতে গাড়ি চলছে।
কুয়াশা দেখলেই আমার খেঁজুর রসের কথা মনে হয়। মামার বাড়িতে শীতের সকালের খেঁজুরের রস। কি একটা আয়োজন ছিল।দল বেঁধে খালাতো মামাতো ভাইবোন যেতাম মামা বাড়িতে। মামা বলে রাখতেন কোন এক গাছিকে। হাটে যাবার আগে রস দিয়ে
যেত। দল বেঁধে খেঁজুরের রস খাওয়া।
ভারী জামা কাপড় গাঁয়ে দিয়ে লাইনে দাড়িয়ে থাকা। যথেষ্ট রস থাকতো গাছির কাছে। যে যত খেতে পারে। এত্ত বড় ছিল গ্লাস। আমার টার্গেট দুই গ্লাস। পারলে আরো বেশি। এত মিষ্টি। ঠাঁণ্ডা রস খেতে খেতে গাঁয়ের লোম দাড়িয়ে যেতে। গলাও ধরে আসত ঠাঁণ্ডায়। প্রথম প্রথম এক টানে খেতাম অনেক খানি। তারপর যখন গলা ধরে আসত তখন, আসতে আসতে। মামা বলতেন,'একটানে খা।', 'কি বলিস মাত্র দুই গ্লাস, আরো নে!' আর এক গ্লাসও হয়ে যায়। কুয়াশা মানে খেঁজুরের রস খাওয়া, গ্লাসকে গ্লাস। এখানে খেজুরের গাছ নেই, গাছিও নেই। কুয়াশায় গাড়ি চলছে ধীরে ধীরে।
রসের পর্ব শেষে পিঠা পর্ব। রাতের বেলায় চিতৈ পিঠা দুধের রসে ভিজানো ছিল। দুধ পিঠা চিতৈ পিঠা। গুলো ভিজে তুলতুলে হয়ে থাকতো।কিছুকিছু পিঠার মাঝের অংশ ভিজত না। সেগুলো পোঁচা পিঠা। কারন সেগুলো ভিঝে নি। তবে মাঝের টুকু ছাড়া বাকি অংশ টুকু
খাওয়া যেতে। বেছে বেছে আমি ছোট গুলি নিতাম। কেননা ছোট গুলি বেশি তুলতুলে হত। পাটিশাপটা পিঠাও রাতে বানিয়ে রাখতেন মামী। সাথে সেমাই পিঠা। সকালে হত ভাপা পিঠা। দুই স্তরের এত্ত বড়। একটা খাওয়া ছিল বিরাট ব্যাপার। ঝাল আইটেমের মধ্যে ছিল গরুর মাংস দিয়ে গরম গরম চিতৈ পিঠা। এত টুকুন পেটে এত্ত কিছু কি করে খেতাম কে জানে। কুয়াশা মানে মামার বাড়িতেঅনেক অনেক পিঠা খাওয়া। এখানে মামা বাড়ি নেই, মাটির উনুন নেই, পিঠাও নেই। তবে জায়াগাটা গ্রাম গ্রাম লাগছে। রাস্তের দুই ধারে গুটি কয়েকটা বাড়ি। যেন ছোট্ট গ্রামের গুচ্ছ বাড়ি। যেন গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি।
সকালের খাওয়া শেষে খেলা শুরু। দারিয়া বান্ধা, মাংস চোর। দারিয়া বান্ধার কোর্ট ছিল পুকুরের পাশে। মাংস চোরের কোর্ট ছিল বাড়ির পিছনে। ও হ্যাঁ, কানা মাছি খেলাও হত আর হত লুকোচুরি খেলা। এক এক খেলায় এক ধরনের মজা। এক এক খেলায় এক এক ধরনের শাররিক ভাষা থাকতো। লুকোচুরি খেলার সময় নিজস্ব কিছু জায়গা থাকতো লুকানোর। দৌড়িয়ে গিয়ে লুকিয়ে থেকে চুপচাপ পদধ্বনি শোনা, কেউ কি এদিকে আসছে কিনা। হৃদপিণ্ডের শব্দ শোনা যেত খুব। কেউ কেউ হয়রান আর খেলবে না বলে উত্তেজিত দর্শক বনে যেত। সব খেলায় হৈচৈ হত দারুন। সব শেষে ঝগড়া দিয়ে খেলা শেষ হত। সেই রেশ শেষ হত পুকুরে গোসল করে। ঝুপ ঝাপ গোসল শেষ। বেজায় ঠাণ্ডা। কুয়াশায় ভেসে আসে দারিয়া বান্দা খেলা, মাংস চোর, কানা মাছি আর লুকোচুরি খেলা।
শীতের সকাল পেরলেই যেন ঝুপ করে বিকেল চলে আসে। বিকেল মানেই সরিষা ক্ষেত ভ্রমন। জমির পর জমি হলুদ আর হলুদ। যেন হলুদহলুদ কোন শাড়ি কেউ বিছিয়ে রেখেছে। শীতের বুড়ি হবে হয়তো। সরিষার মিষ্টি একটা ঘ্রান আছে। হাল্কা মিষ্টি ঘ্রান। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত
হয়ে গেলে আইলের উপরে বসে পড়া। তারপর অনেক অনেক গল্প। অনেক খুনসুটি। কখনো হাঁসতে হাঁসতে একজনের গায়ে আরেক জন পরেযাওয়া। কখনো মৌ মাছির মধু আহরন দেখা। কখনো গুন গুন করতে গান গাওয়া, কখনো জোরে জোরে। এরি মধ্যে সরিষা ফুল কারো
চুলে শোভিত হয়ে গিয়েছে সেই নিয়ে কত হাসা হাসি। কুয়াশা মানে হলুদের ক্ষেতে বসে আড্ডা দেওয়া। এখানে সরিষা ক্ষেত দেখিনি কখনো।সৃতিতে হলুদের সমারোহ। চারপাশে যদিও বরফ আর বরফ। সাদা বরফে ঠিকরে আসছে কিছু আলো। চোখ লাগে কেমন যেন। একে ইংলিশে
বলে হোয়াইট আউট। কুয়াশায় বের হয়ে ছিলাম। বেশি দূরে না, কাছে কোথাও। কুয়াশায় ভর করে কত স্মৃতি উঁকি দিয়ে গেল। কুয়াশার আর একটা মানে কিন্তু কবিতাকে মনে করা। কুয়াশাকে জীবনানন্দের মত সুন্দর করে আর কে সাজিয়েছে! তার একটি কবিতা দিয়ে শেষ করছি...
একদিন কুয়াশার
একদিন কুয়াশার এই মাঠে আমারে পাবে না কেউ খুঁজে আর, জানি;
হৃদয়ের পথ চলা শেষ হল সেই দিন- গিয়েছে যে শান্ত- হিম ঘরে,
অথবা সান্তনা পেতে দেরি হবে কিছু কাল- পৃথিবীর এই মাঠখানি
ভুলিতে বিলম্ব হবে কিছু দিন, এ মাঠের কয়েকটি শালিকের তরে
আশ্চর্য আর বিস্ময়ে আমি চেয়ে রব কিছু কাল অন্ধকার বিছানার কোলে,
আর সে সোনালি চিল ডানা মেলে দূর থেকে আজো কি মাঠের কুয়াশায়
ভেসে আসে? সেই ন্যাড়া অশ্বথে’র পানে আজো চলে যায়
সন্ধ্যা সোনার মত হলে
ধানের নরম শিষে মেঠো ইঁদুরের চোখ নক্ষত্রের দিকে আজো চায়?
সন্ধ্যা হলে? মউমাছি চাক আজো বাঁধে না কি জামের নিবিড় ঘন ডালে,
মউ খাওয়া হয়ে গেলে আজো তারা উড়ে যায় কুয়াশায় সন্ধ্যার বাতাসে-
কতো দূরে যায়, আহা... অথবা হয়ত কেউ চালতার ঝরাপাতা জ্বালে
মধুর চাকের নিচে- মাছিগুলো উড়ে যায়... ঝরে পড়ে... মরে থাকে ঘাসে-
কুয়াশাছন্ন সকাল। ঘন কুয়াশা। এখানেও কুয়াশা আসে। বেশি দূরে দেখা যায় না। আসতে আসতে গাড়ি চলছে।
কুয়াশা দেখলেই আমার খেঁজুর রসের কথা মনে হয়। মামার বাড়িতে শীতের সকালের খেঁজুরের রস। কি একটা আয়োজন ছিল।দল বেঁধে খালাতো মামাতো ভাইবোন যেতাম মামা বাড়িতে। মামা বলে রাখতেন কোন এক গাছিকে। হাটে যাবার আগে রস দিয়ে
যেত। দল বেঁধে খেঁজুরের রস খাওয়া।
ভারী জামা কাপড় গাঁয়ে দিয়ে লাইনে দাড়িয়ে থাকা। যথেষ্ট রস থাকতো গাছির কাছে। যে যত খেতে পারে। এত্ত বড় ছিল গ্লাস। আমার টার্গেট দুই গ্লাস। পারলে আরো বেশি। এত মিষ্টি। ঠাঁণ্ডা রস খেতে খেতে গাঁয়ের লোম দাড়িয়ে যেতে। গলাও ধরে আসত ঠাঁণ্ডায়। প্রথম প্রথম এক টানে খেতাম অনেক খানি। তারপর যখন গলা ধরে আসত তখন, আসতে আসতে। মামা বলতেন,'একটানে খা।', 'কি বলিস মাত্র দুই গ্লাস, আরো নে!' আর এক গ্লাসও হয়ে যায়। কুয়াশা মানে খেঁজুরের রস খাওয়া, গ্লাসকে গ্লাস। এখানে খেজুরের গাছ নেই, গাছিও নেই। কুয়াশায় গাড়ি চলছে ধীরে ধীরে।
রসের পর্ব শেষে পিঠা পর্ব। রাতের বেলায় চিতৈ পিঠা দুধের রসে ভিজানো ছিল। দুধ পিঠা চিতৈ পিঠা। গুলো ভিজে তুলতুলে হয়ে থাকতো।কিছুকিছু পিঠার মাঝের অংশ ভিজত না। সেগুলো পোঁচা পিঠা। কারন সেগুলো ভিঝে নি। তবে মাঝের টুকু ছাড়া বাকি অংশ টুকু
খাওয়া যেতে। বেছে বেছে আমি ছোট গুলি নিতাম। কেননা ছোট গুলি বেশি তুলতুলে হত। পাটিশাপটা পিঠাও রাতে বানিয়ে রাখতেন মামী। সাথে সেমাই পিঠা। সকালে হত ভাপা পিঠা। দুই স্তরের এত্ত বড়। একটা খাওয়া ছিল বিরাট ব্যাপার। ঝাল আইটেমের মধ্যে ছিল গরুর মাংস দিয়ে গরম গরম চিতৈ পিঠা। এত টুকুন পেটে এত্ত কিছু কি করে খেতাম কে জানে। কুয়াশা মানে মামার বাড়িতেঅনেক অনেক পিঠা খাওয়া। এখানে মামা বাড়ি নেই, মাটির উনুন নেই, পিঠাও নেই। তবে জায়াগাটা গ্রাম গ্রাম লাগছে। রাস্তের দুই ধারে গুটি কয়েকটা বাড়ি। যেন ছোট্ট গ্রামের গুচ্ছ বাড়ি। যেন গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি।
সকালের খাওয়া শেষে খেলা শুরু। দারিয়া বান্ধা, মাংস চোর। দারিয়া বান্ধার কোর্ট ছিল পুকুরের পাশে। মাংস চোরের কোর্ট ছিল বাড়ির পিছনে। ও হ্যাঁ, কানা মাছি খেলাও হত আর হত লুকোচুরি খেলা। এক এক খেলায় এক ধরনের মজা। এক এক খেলায় এক এক ধরনের শাররিক ভাষা থাকতো। লুকোচুরি খেলার সময় নিজস্ব কিছু জায়গা থাকতো লুকানোর। দৌড়িয়ে গিয়ে লুকিয়ে থেকে চুপচাপ পদধ্বনি শোনা, কেউ কি এদিকে আসছে কিনা। হৃদপিণ্ডের শব্দ শোনা যেত খুব। কেউ কেউ হয়রান আর খেলবে না বলে উত্তেজিত দর্শক বনে যেত। সব খেলায় হৈচৈ হত দারুন। সব শেষে ঝগড়া দিয়ে খেলা শেষ হত। সেই রেশ শেষ হত পুকুরে গোসল করে। ঝুপ ঝাপ গোসল শেষ। বেজায় ঠাণ্ডা। কুয়াশায় ভেসে আসে দারিয়া বান্দা খেলা, মাংস চোর, কানা মাছি আর লুকোচুরি খেলা।
শীতের সকাল পেরলেই যেন ঝুপ করে বিকেল চলে আসে। বিকেল মানেই সরিষা ক্ষেত ভ্রমন। জমির পর জমি হলুদ আর হলুদ। যেন হলুদহলুদ কোন শাড়ি কেউ বিছিয়ে রেখেছে। শীতের বুড়ি হবে হয়তো। সরিষার মিষ্টি একটা ঘ্রান আছে। হাল্কা মিষ্টি ঘ্রান। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত
হয়ে গেলে আইলের উপরে বসে পড়া। তারপর অনেক অনেক গল্প। অনেক খুনসুটি। কখনো হাঁসতে হাঁসতে একজনের গায়ে আরেক জন পরেযাওয়া। কখনো মৌ মাছির মধু আহরন দেখা। কখনো গুন গুন করতে গান গাওয়া, কখনো জোরে জোরে। এরি মধ্যে সরিষা ফুল কারো
চুলে শোভিত হয়ে গিয়েছে সেই নিয়ে কত হাসা হাসি। কুয়াশা মানে হলুদের ক্ষেতে বসে আড্ডা দেওয়া। এখানে সরিষা ক্ষেত দেখিনি কখনো।সৃতিতে হলুদের সমারোহ। চারপাশে যদিও বরফ আর বরফ। সাদা বরফে ঠিকরে আসছে কিছু আলো। চোখ লাগে কেমন যেন। একে ইংলিশে
বলে হোয়াইট আউট। কুয়াশায় বের হয়ে ছিলাম। বেশি দূরে না, কাছে কোথাও। কুয়াশায় ভর করে কত স্মৃতি উঁকি দিয়ে গেল। কুয়াশার আর একটা মানে কিন্তু কবিতাকে মনে করা। কুয়াশাকে জীবনানন্দের মত সুন্দর করে আর কে সাজিয়েছে! তার একটি কবিতা দিয়ে শেষ করছি...
একদিন কুয়াশার
একদিন কুয়াশার এই মাঠে আমারে পাবে না কেউ খুঁজে আর, জানি;
হৃদয়ের পথ চলা শেষ হল সেই দিন- গিয়েছে যে শান্ত- হিম ঘরে,
অথবা সান্তনা পেতে দেরি হবে কিছু কাল- পৃথিবীর এই মাঠখানি
ভুলিতে বিলম্ব হবে কিছু দিন, এ মাঠের কয়েকটি শালিকের তরে
আশ্চর্য আর বিস্ময়ে আমি চেয়ে রব কিছু কাল অন্ধকার বিছানার কোলে,
আর সে সোনালি চিল ডানা মেলে দূর থেকে আজো কি মাঠের কুয়াশায়
ভেসে আসে? সেই ন্যাড়া অশ্বথে’র পানে আজো চলে যায়
সন্ধ্যা সোনার মত হলে
ধানের নরম শিষে মেঠো ইঁদুরের চোখ নক্ষত্রের দিকে আজো চায়?
সন্ধ্যা হলে? মউমাছি চাক আজো বাঁধে না কি জামের নিবিড় ঘন ডালে,
মউ খাওয়া হয়ে গেলে আজো তারা উড়ে যায় কুয়াশায় সন্ধ্যার বাতাসে-
কতো দূরে যায়, আহা... অথবা হয়ত কেউ চালতার ঝরাপাতা জ্বালে
মধুর চাকের নিচে- মাছিগুলো উড়ে যায়... ঝরে পড়ে... মরে থাকে ঘাসে-
আকাশপ্রদীপ
আকাশপ্রদীপ
.... যারা গাইত গান,
যারা করত নতুনেরে আহ্বান,
তারা পুরাতন সময়ের সাথে
হারিয়ে গেছে,
তাদের
কিছু রেখা, কিছুর সুর
পাছে পরে আছে,
তাদের
কিছু আলো ছড়ানো আকাশে,
পুরনো
প্রদীপের আলো ফুরিয়ে গেছে,
আমি হয়ে আসি তাই
উদয়ন্ত রবি,
আমি হয়ে আসি আজিকার
কবি,
মৃত সব গানে
আমি দেই সুর,
আমি গাই সব গান
সুমুধুর,
আমি জ্বালি আঁধারে অনন্ত
আলো,
পৃথিবীর
সব আঁধার দূর হয়ে
গেল,
নব যুগে নব দিগন্তে
উদয়ন্ত রবি,
আমি হয়ে আসি আজিকার
কবি,
যুগ যুগান্তরে কেউ জ্বালেনি আলো,
মানুষের
হৃদয়ে আজ তাই আঁধারের
কালো,
আঁধারের
মাঝে হাতরিয়ে চলে,
দুরের
তারাদের সাথে কি কথা
বলে!
আমি নিয়ে আসি প্রেরণার
সব বাণী,
মানবের
তরে আমার এ কবিতাখানি,
নব যুগে নব দিগন্তে
উদয়ন্ত রবি,
আমি হয়ে আসি আজিকার
কবি,
আঁধার
দূর হবে পৃথিবীর 'পরে,
মানুষেরে
করে যাব ধন্য করে,
যুগে যুগে আমার এই
কবিতা খানি,
মানুষেরে
দিয়ে যাবে আশার বাণী,
ভালবাসা
দিবে, দিবে প্রেরণার গান,
মানুষের
দিবে সব
অমুল্য দান,
আলোর শিখায়
সব আলোকিত করে,
মানুষেরে
করে যাব ধন্য করে,
নব যুগে নব দিগন্তে
উদয়ন্ত রবি,
আমি হয়ে আসি আজিকার
কবি…..
Subscribe to:
Posts (Atom)