Followers

Tuesday, February 11, 2014

লেখক 

সবাই লেখালেখি করতে পারে না, যারা লেখালেখি করেন, তারা সৌভাগ্যবান/সৌভাগ্যবতী। আমি বাড়িয়ে বলছি না, যারা নিয়মিতি লেখেন তারা আসে পাশের জগতটাকে যেভাবে দেখেন, সাধারণ মানুষ সেভাবে দেখেনা। সেই অদেখা ভুবন অনেক সুন্দর আর আনন্দময়, সেই ভুবন অনেক সুখের, দুঃখও আছে সেই দুঃখটাও সুখের। যারা লেখেন তারা বিষয়টা জানেন। আবার লেখার কাজটা যে অনেক কঠিন, যারা লেখেন তারা সেই বিষয়টাও জানেন, কখনো কখনো যন্ত্রণারও।
লেখতে চাইছেন লেখতে পারছেন, এই ব্যাপারটা অনেক কষ্টের, অনেক যন্ত্রণার। অনেকেই এই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে লেখালেখি ছেড়ে দেন। আমার এই লেখার প্রথম প্রাপক তারা।

কোন কাজই রাতারাতি সম্ভব না। লেখক হয়ে উঠাও তার ব্যতিক্রম না। অনেকের ক্ষেত্রে অনেক কঠিন। লেখক হয়ে উঠার জন্য অনেক শ্রম আর ত্যাগের প্রয়োজন আছে। যে যতটুকু শ্রম দেবে, তার কাজ তত শানিত হবে, যে যতটুকু তাগ করবে, সে ততটুকু এগিয়ে যাবে। যারা বড় বড় লেখক হয়েছেন এবং আছেন, ভাববেন না, শুধু প্রতিভা দিয়ে উঁনারা এত বড় হয়েছেন, প্রতিভার সাথে শ্রম আর ত্যাগও আছে। আপনি যেহেতু লেখেন, ধরে নেয়া যায়, আপনার প্রতিভা আছে। তাই আপনার আর সাফল্যের মাঝে শুধু আছে শ্রম আর ত্যাগ। শ্রম আর ত্যাগের সাথে লেখে যান, আপনিও বড় লেখক হতে পারবেন। শ্রম আর ত্যাগ এক এক জনের জন্য
এক এক রকম হবে, আমার জন্য শ্রম হচ্ছে সময় খুঁজে লেখে যাওয়া আর ত্যাগ হচ্ছে আমার প্রিয় জিনিস (যেমন অতিরিক্ত ঘুম অথবা অতিরিক্ত রেস্ট) ত্যাগ করা।

আপনি নিয়মিত লেখক হয়ে উঠলেন, আপনার প্রাপ্তি কি? এই প্রাপ্তির কারনেও অনেকেই লেখালেখি থেকে দূরে সরে যায়। আপনি অনেকদিন লিখে যাচ্ছেন, কেউ আপনার লেখা পড়ছেন না, অথবা কেউ আপনার লেখা নিয়ে কটূক্তি করছে অথবা কেউ আপানকে পাত্তা দিচ্ছে না ইত্যাদি এগুলো নিয়ে যদি বেশি ভাবেন, তাহলে আপনি বেশিদিন লেখতে পারবেন না। আপনার মনে রাখতে হবে আপানর লেখা দিয়ে প্রথমত আপনি উপক্রিত হচ্ছেন, আপনি বিচক্ষণ হচ্ছেন, তারপর পাঠক আপানর লেখা পড়ে অনেক কিছু শিখছে, জানছে।তাই আপনি লিখে যাবেন। কে কি বলছে, কি ভাবছে সেটা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে, কিভাবে ভাল লেখা যায় সেটা নিয়ে ভাবুন, সমালোচনা
কাজে লাগান। তবুও লেখা বন্ধ করবেন না। লেখে যাবেন, জেনে রাখুন লিখতে লিখতে লেখক হতে হয়। কেউ আপানর লেখা না শুনুক, নিজের লেখা নিজেকে পড়ে শুনান, নিজের লেখাকে ভালবাসুন, নিজের দেয়ালে, নিজের ব্লগে অথবা লেখালেখির পেজে লেখেন। আপনার লেখাকে
প্রথমত আপনার ভালবাসতে হবে, সেটাই সব চেয়ে বেশি জরুরী। কোন 'লাইক' হইত নাও পরতে পারে, তাতে ক্ষতি নেই, অন্য লেখা লেখবেন, পোস্ট করবেন। কেউ না কেউ আপনার লেখা পড়ে উপক্রিত হবে, তবে সবচেয়ে উপক্রিত হবেন আপনি, আপনি ধীরে ধীরে লেখক হবে উঠবেন।

দ্বিতীয় প্রাপক, যারা আগে লেখতে, এখন আর লেখেন না। আপনি ভেবে দেখেছেন কি, আপনি কত সুন্দর ভাবনা, জানা অজানা বিষয়গুলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারতেন। হয়তো সময়ের অভাবে, কাজের চাপে লেখা কাজ হারিয়ে গেছে, কিন্তু আপনার ভাবনাগুলো কেউ আপনার মত
করে ভাবতে পারবেনা্‌, তাই আপনার না লেখার কারনে অনেকেই উপক্রিত হচ্ছে না, সব চেয়ে বড় ব্যাপার আপনার মনে ভাবনাগুলো জমে আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে, আবার লেখা শুরু করুন, ভাল লাগবে, অনেকেই অনেক অদেখা ভুবন দেখতে পারবে না।

তৃতীয় প্রাপক, যারা ভাল লেখেন। যারা ভাল লেখেন তারা জানেন তারা ভাল লেখেন, অন্তত আঁচ করতে পারেন। তাদের প্রতি অনুরোধ, অন্য লেখার পাশাপাশি কিভাবে ভাল লেখা যায়, ভাল লেখক হয়ে উঠা যায় তা আমাদের জানান। মনে রাখবেন নতুন লেখকদের মাঝেই আপনার যোগ্য উত্তূরসরি আছে, তাকে একটু সাহায্য করুন, একটি লেখা অনেকের জীবনে অনেক পরিবর্তন আনতে পারে। যারা লেখতে পারে তাদের অনেক অনুপ্রানিত করতে পারে।

আশা করছি যারা লেখতে পারেন তারা লেখে যাবেন। আমাদের অনেক অনেক লেখা উপহার দিবেন আর অনেক জানা অজানার বিষয় আমাদের শেয়ার করেবেন। সবশেষে সবার জন্য ছোট্ট একটা কবিতা উপহার রইল।

এক কবির মৃত্যুতে,
অদেখা স্বপ্নগুলো হারায় পথে,
আকাশগুলো ঠিকানা হারায়,
দুরের ভুবন দূরে থেকে যায়,
পাহাড়গুলো বিষণ্ণ ভীষণ,
সমুদ্রদের আকাশ ভ্রমন,
জ্যোৎস্নার সব দৃশ্যগুলো,
কোথায় যেন হারিয়ে গেল,
দুরের বনের গল্পরা সব,
বনে হারায়, ভীষণ নীরব,
গানের মাঝে নেই কোন সূর,
কবিতাগুলো ব্যদনা বিধুর,
গানের মাঝে নেই কোন সূর,
কবিতাগুলো ব্যদনা বিধুর...

* ভুল বানানগুলো ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখবেন।



Longmont, Colorado
January 26, 2014

No comments:

Post a Comment